জনপ্রত্যাশা ও জনস্বার্থ ভিত্তিক উন্নয়নে অগ্রাধিকার মেয়র আতিকুল ইসলামের

প্রকাশিতঃ 7:27 am | March 27, 2019

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে আতিকুল ইসলাম একবার নিজেই বলেছিলেন, ‘তাঁর হাতে কোন ম্যাজিক নেই। কিন্তু সবার ভালোবাসা নিয়েই মেয়র হতে চান।’

৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩০২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়ে আতিকুল ইসলাম প্রমাণ করেছেন সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার মিশনে সফল হওয়া তাঁর পক্ষেই সম্ভব! নিজের এই জয়কেও ঢাকার নতুন দিনের পথ চলার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন।

কিন্তু কীভাবে চ্যালেঞ্জের ঘোড়ার পিঠে চড়ে কঠিনকে জয় করবেন; গৎবাঁধা বৃত্ত বন্দি ডিএনসিসিকে এ অবস্থা থেকে বের করে এনে নিরাপদ, সুখী ও ছায়াশীতল ঢাকা গড়বেন স্বপ্ন বোনা এই কারিগর? এমন প্রশ্ন যখন নির্বাচনের পর আবারো জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে তখন আবারো সুসংবাদই দিয়েছেন অচল ঢাকাকে সচল করার এই স্বপ্ন নির্মাতা।

আরো পড়ুন:
বঙ্গবন্ধুর জীবন্ত সেই স্মৃতির সামনে অপলক প্রধানমন্ত্রী, আবেগ উদ্দীপ্ত সেনাপ্রধান

উন্নয়নে উত্তরের এই নগর পিতা নগরীর ৫৪ টি সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের উপর জোর দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন প্রথম থেকেই। বর্ষাকালের আগেই তিনি সমন্বিত উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করতে আগ্রহী।

দায়িত্বভার গ্রহণের পরেই তিনি সুস্থ, সচল ও আধুনিক শহর গড়তে তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন। মেয়র নগরকেন্দ্রিক উন্নয়নে সমতা চান। যা কিছু হবে সেখানে থাকবে সুষ্ঠু পরিকল্পনা। পরিকল্পনা ছাড়া কিছুই হবে না। উন্নয়ন বৈষম্য চলবে না।

সম্প্রতি নিজ কার্যালয়ে জনপ্রিয় গণমাধ্যম কালের আলো’র সঙ্গে কথা বলেন বহুমুখী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, সাহসী ও কর্মবীর এই নগর পিতা। নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট আতিকুল বিশ্বাস করেন উন্নয়নে।

উচ্চগতির জীবনে মেয়র হওয়ার আগে ও পরে এক মুহুর্তও বসে থাকেননি। সময় কাটাননি অলস! ছুটে বেড়িয়েছেন, চিহ্নিত করেছেন সমস্যা। তৎপর হচ্ছেন সমাধানেও। যেন নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়নই তাঁর ব্রত!

আরো পড়ুন:
সুস্থ ও সচল ঢাকা গড়তে চান আতিকুল ইসলাম

দু’টি উদাহরণই দেখা যাক না! বাসচাপায় নিহত বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরীর (২০) নিহতের পর কথা মোতাবেক মাত্র দুই দিনের মধ্যেই ‘আবরার ফুটওভার ব্রিজ’ নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর কথার সঙ্গে কাজের মিল পেয়েছেন।

আবার পরিষ্কার রাস্তায় ময়লা ফেলার নির্দেশ প্রদান করা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অতি উৎসাহী অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাকেও নুন্যতম ছাড় দেননি আতিকুল ইসলাম। সুস্পষ্ট অভিযোগ আমলে নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গেছেন, সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। ঢাকাকে জীর্ণ দশা থেকে তুলে আনতে নিবিষ্ট মনে কাজ করে মেয়র আতিকুল দু:খ ঘোচাতে চান নগরীর।

দৃঢ় প্রত্যয়ী এই মেয়র নগরের উন্নয়নে তাঁর পূর্বসুরী মেয়র প্রয়াত আনিসুল হকের কথা মনে রেখে তাঁর উন্নয়ন ভাবনাকেও এগিয়ে নিতে চান। সাবেক মেয়র আনিসুল হকের উন্নয়ন উদ্যোগসমূহকে যুগোপযোগী করে নিজস্ব পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে চান।

কালের আলোকে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে তিনি সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে যুগপৎ পরিকল্পনাও তাঁর হাতে রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু পরিকল্পনা গ্রহণ নয়, তা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে জয়ী হওয়া।

উপ-নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে আতিকুল ইসলাম ২০১৩-১৪ মেয়াদে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের পোশাকখাতের শ্রম পরিস্থিতি ও পণ্যের মান উন্নয়নে গঠিত সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিজেরও সভাপতি এবং বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি)।

সবার ভালোবাসা নিয়েই রেকর্ড ভোটে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আতিকুল ইসলাম। সবাইকে নিয়ে কাজ করে সবার জন্য উপযুক্ত নগরী গড়ে তোলাই তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ। যানজট ও জলজটমুক্ত আধুনিক নগরীর জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিস্তারিত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

সেক্ষেত্রে ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়ন প্রাধান্য পাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিসমূহ দূর করা ছাড়াও জলজট নিরসনে উন্নত পরিকল্পনা নেওয়া হবে।

মেয়র আতিকুল ইসলাম আবারো জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে আধুনিক নগরে উন্নীত করতে তিনি স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা নিচ্ছেন। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন করা হবে।

সেক্ষেত্রে আগামী এক বছরের মধ্যে ডিএনসিসিকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন এবং আধুনিক নগরে উন্নীত করতে মেয়র আগামী বর্ষার আগেই কাজ শুরু করতে চান। এক্ষেত্রে তিনি সম্মিলিতভাবে কাজ করার পক্ষপাতী।

ডিএনসিসি’র মেয়র আতিকুল ইসলাম কালের আলোকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণাভিযানের সময় তিনি নগরবাসীর প্রত্যাশা, দাবি উপলব্ধি করেছেন। বিভিন্ন এলাকার সংকট-সমস্যার কথা জেনেছেন।

সুতরাং, তিনি মূলত: জনপ্রত্যাশা ও জনস্বার্থ ভিত্তিক উন্নয়নের অগ্রাধিকারকে সামনে রেখেছেন। নগর অ্যাপসকে সক্রিয় করে তিনি উন্নয়ন ও জনসম্পৃক্ত নাগরিক সেবাকে ফলপ্রসু করতে আগ্রহী।

নগরকেন্দ্রিক উন্নতির পাশে যেন বৈষম্য না থাকে সেটি নিশ্চিত করার মধ্যে দিয়ে ডিএনসিসি হবে গতিশীল ও আধুনিক। মানবিক, উদারপন্থী ও সুস্থ বিবেকসম্পন্ন নগর পিতা আতিকুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাঙ্খিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, গতিময় ও প্রগতিশীল ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার পূরণেও সফল হবেন বলেই মনে করছেন সবাই।

কালের আলো/আরএ/এএ