সেনাপ্রধানের কুয়েত সফরে ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিতে নতুন মাত্রা; দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
প্রকাশিতঃ 10:03 pm | February 19, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
প্রায় তিন দশক যাবত নিরাপদ ও আধুনিক কুয়েত গঠনে নিজেদের মেধা ও শ্রম দিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মরুভূমির এই দেশ পুনর্গঠনে এখন কাজ করছেন ৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য। এটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের পর কোন বৈদেশিক দায়িত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সংখ্যক মোতায়েন। উষ্ণ মরুভূমির প্রতিকূল আর বৈরী আবহাওয়ায় দক্ষতা আর পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাঁরা নিজেদের গৌরব আর সুনামকে দেদীপ্যমান করেছেন।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর পরিশ্রম, দক্ষতা, সাহস আর নিষ্ঠার ওপর বরাবরই আস্থাশীল দেশটির আমির উপসাগরীয় যুদ্ধে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীতে অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান’র তিন দিনের কুয়েত সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের এই সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জানা যায়, বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের নিষ্ঠা, নৈতিক মনোবল, সাহস ও আত্মত্যাগকে বিশেষ মর্যাদায় দেখে আসছে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কুয়েত। তাঁরা উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন বাংলাদেশি সেনাদের। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনের কুয়েত সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। এর আগে কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত চিফ অব স্টাফের আমন্ত্রণে প্রতিনিধিদলটি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কুয়েত সফরে যায়।
তাঁর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। একই রকম মত প্রকাশ করে সামরিক কূটনীতিকরা মনে করছেন, সেনাপ্রধানের সরকারি এই সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই সফরকালে সেনাপ্রধান কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল পাইলট সাবাহ জাবের আলআমেদ আলসাবা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ডা. আব্দুল্লাহ মেশাল মুবারক আব্দুল্লাহ এ. আলসাবাহ ও কুয়েত ন্যাশনাল গার্ডের সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার হাশেম আব্দুল রাজ্জাক আল-রিফাইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
সফরকালে সেনাপ্রধান কুয়েতে বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টস্ (বিএমসি) সদর দপ্তর পরিদর্শনসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বাংলাদেশি মিলিটারি কন্টিনজেন্টের অফিসার এবং অন্যান্য পদবির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের লক্ষ্যে অফিসার্স অ্যাড্রেস এবং দরবার নেন। এছাড়াও সেনাপ্রধান সফরকালে কুয়েত আর্মড ফোর্সেস স্টাফ কলেজ পরিদর্শন করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের এই সফরের মধ্যদিয়ে কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে (ওকেপি) নিয়োজিত বাংলাদেশি সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ ও কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
কালের আলো/এমএএএমকে