চীনের ওপর অতিরিক্ত ১০শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিতঃ 2:41 pm | February 28, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

চীন থেকে আসা পণ্যের নপর নতুন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের সর্বশেষ পদক্ষেপঅ এই মাসের শুরুতে ট্রাম্পের শুল্ক আদেশ কার্যকর হওয়ার পর চীন থেকে আমদানিতে ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ১০ শতাংশ করের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

ট্রাম্প বৃহস্পতিবার আরো বলেছেন, তিনি কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ইচ্ছা পোষণ করছেন, যা ৪ মার্চ থেকে কার্যকর হতে চলেছে। মেক্সিকো এবং কানাডার কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনা বাতিল করার লক্ষ্যে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে থাকাকালীন তার মন্তব্য এসেছে।

৪ ফেব্রুয়ারি মেক্সিকো এবং কানাডার ওপর ২৫শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প, যদি দুই দেশ সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি না করে। সীমান্ত তহবিল বৃদ্ধি এবং মাদক পাচার মোকাবেলায় আরো আলোচনা করার বিষয়ে দুই দেশ একমত হওয়ার পর, তিনি শেষ মুহূর্তে এক মাসের জন্য এই পদক্ষেপগুলো স্থগিত রেখেছিলেন।

বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি মনে করেন না যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইলের প্রবাহ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো লিখেছেন, ‘মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে এখনও আমাদের দেশে খুব উচ্চ এবং অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় মাদক প্রবেশ করছে।

এর একটি বড় অংশ চীনে তৈরি।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম দেশটির জাতীয় প্রাসাদ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমরা জানি, ট্রাম্পের যোগাযোগের নিজস্ব পদ্ধতি আছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি আশা করছি আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব এবং ৪ মার্চ আমরা অন্য কিছু ঘোষণা করতে পারব।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও বলেছেন, তার দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সতর্কতা ‘তাৎক্ষণিক এবং অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া’ তৈরি করবে।

দুই দেশের নেতারা পূর্বে বলেছেন, হোয়াইট হাউস যদি তাদের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যায় তবে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে। শুল্ক হলো, সরকার কর্তৃক সংগৃহীত একটি কর এবং দেশে পণ্য আনার ব্যবসা দ্বারা পরিশোধিত।

চীন, মেক্সিকো এবং কানাডা আমেরিকার শীর্ষ তিনটি বাণিজ্য অংশীদার, যারা গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ৪০ শতাংশেরও বেশি অংশ নিয়েছিল। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, তিনটি দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে আইফোন থেকে শুরু করে অ্যাভোকাডো পর্যন্ত সবকিছুর দাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে যেতে পারে।

চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০শতাংশের শুল্ক আরোপের জন্য ট্রাম্পের আহ্বান আগে ঘোষণা করা হয়নি, যদিও তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৬০শতাংশ পর্যন্ত সীমান্ত কর আরোপের পক্ষে ছিলেন।

চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেছেন, তার দেশ ফেন্টানাইল সম্পর্কে উদ্বেগ মোকাবেলায় ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করেছে।

তিনি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশীয় ওষুধের চাহিদা হ্রাস করা এবং আইন প্রয়োগকারী সহযোগিতা জোরদার করা হলো মৌলিক সমাধান। যেখানে সতর্ক করে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্পের শুল্ক পদক্ষেপ ‘দুই পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যতে মাদকবিরোধী সহযোগিতাকে প্রভাবিত এবং দুর্বল করতে বাধ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত একতরফা শুল্ক তার নিজস্ব সমস্যার সমাধান করবে না, এটি উভয় পক্ষ বা বিশ্বের জন্যও উপকারী হবে না।’

সূত্র: বিবিসি

কালের আলো/এসএকে