ধ্বংসস্তূপের মধ্যে রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে গাজাবাসী
প্রকাশিতঃ 10:53 am | March 01, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
গাজায় ইসরায়েলের ১৫ মাসের নির্মম বোমাবর্ষণের পর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে ক্ষতবিক্ষত গাজা উপত্যকায় বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। এই ধ্বংস হওয়া নগরীকেই ব্যানার ও পতাকা দিয়ে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাজার বাসিন্দারা। শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস।
গাজাবাসী এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে রমজানের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
এদিকে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে রমজান উপলক্ষে বিধি-নিষেধ আরোপ করবে ইসরায়েল। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র এ কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে বিধি-নিষেধের আওতায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা বিশদ বলেননি তিনি।
গত বছর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ৫৫ বছরের নিচে কোনো ফিলিস্তিনি পুরুষ এবং ৫০ বছরের নিচে কোনো নারীকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেয়নি। এ ছাড়া জেরুজালেমের ওল্ড সিটিতে হাজারো ইসরায়েলি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
এই পবিত্র মাসের শুরুতে একতা ও আশার অনুভূতি হৃদয়ে ধারণ করে, রঙিন আলো দিয়ে ভবনগুলো সাজাচ্ছেন এই বাসিন্দারা। অনেকের কাছে এই প্রস্তুতিগুলো কষ্টের মাঝে শান্তি ও আধ্যাত্মিক শক্তির একটি প্রতীকও।
এছাড়া, রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে রাস্তাগুলো সাজিয়ে তুলছে ফিলিস্তিনিরা। প্রস্তুত করছে ঐতিহ্যবাহী খাবার। গাজা শহরের দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে রমজান করিম। গাজার বাসিন্দারা আলোকসজ্জা কিনতে দোকানে ভিড় করছেন। অনেকেই রমজান মাস উপলক্ষে শপিং করছেন ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করছেন।
পাশাপাশি, ঐতিহ্যবাহী খাবার কদাইফ তৈরিতে অনেককে ব্যস্ত দেখা গেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধবিরতি চললেও গাজাবাসীর দুর্ভোগ কমেনি। ইসরায়েলের হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পরও গাজার বাসিন্দারা তাদের বিশ্বাস ও ধৈর্য দিয়ে আবারও নিজেদের সম্প্রদায়কে গড়ে তুলতে চাইছে। বহু পরিবার পবিত্র রমজান মাসের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তবে বহু মানুষ ইসরায়েলের হামলায় বাড়িঘর, অর্থকড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত। তাই আগের মতো তারা বাড়িঘর সাজাতে বা খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে পারছে না। গাজার এক লণ্ঠনের দোকানদার বলেন, আগে রমজানে বেচাকেনা বেশ জমে ওঠত। এখন অবস্থা আর আগের মতো নেই। মানুষের জীবন তছনছ হয়ে গেছে। বাজারে লোকজনের আনাগোনা খুব কম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে তখন থেকে চলা ওই যুদ্ধে ৪৮ হাজার ৩৬৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৭৮০ জন।
অন্যদিকে অবিলম্বে গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে হামাস। গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে মিসরের রাজধানী কায়রোয় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে দর-কষাকষি শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মিসরের কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় আজ শনিবার শেষ হতে যাচ্ছে।
সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি
কালের আলো/এসএকে