সড়কে গাড়ির জট, তিল ঠাঁই নেই মেট্রোরেলে
প্রকাশিতঃ 5:42 pm | March 03, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
পবিত্র মাহে রমজানে তীব্র যানজট থেকে নিস্তার মেলেনি রাজধানীবাসীর। নিত্যদিন তীব্র যানজটে খাবি খেতে হচ্ছে অফিস-আদালত শেষে ঘরমুখো মানুষকে। এমন বাস্তবতায় স্বস্তির বাহন হয়ে ওঠছে মেট্রোরেল। যদিও রমজানে ইফতারের আগে ভিড় ঠেলে মেট্রোরেলে ওঠা এক দুঃস্বপ্ন। বিশেষ করে ইফতারের দুই থেকে দেড় ঘণ্টা আগে মেট্রোরেলে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। রীতিমতো যুদ্ধ করে উঠতে হচ্ছে মেট্রোতে। একটি, দুটি, তিনটি করে চার-পাঁচটি মেট্রোরেল চলে গেলেও ভিড়ের কারণে যাত্রীরা উঠতে পারছেন না।
দেখা গেছে, মতিঝিল থেকে উত্তরা পর্যন্ত সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত আটটা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলছে বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেল। ঢাকার চিরচেনা যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকে এখন মেট্রোরেলকে বাহন হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। ফলে স্টেশনগুলোতে ভিড় বাড়ছে যাত্রীর। সোমবার (০৩ মার্চ) রোজার দ্বিতীয় দিনেও মেট্রোরেলে প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মতিঝিল স্টেশন থেকেই পুরোপুরি ভরে যায় মেট্রোরেলের বগি। পরের স্টেশনগুলো যাত্রীদের জন্য ওঠাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। রীতিমতো যুদ্ধ করে গন্তব্যে ফিরতে হয় যাত্রীদের। তবে শত কষ্ট হলেও চরম ভোগান্তির যানজট এড়াতে পারছেন, এটাই যাত্রীদের স্বস্তির কারণ।
প্ল্যাটফর্মে ওঠে দেখা যায়, যেসব মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিলের দিকে আসছে সেগুলোতে তেমন কোনো যাত্রী নেই। এই মেট্রোরেলগুলোতে বড়জোর ২০০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী আছেন। যদিও একটি মেট্রোরেলের মোট যাত্রী ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন।
আরও দেখা যায়, মতিঝিল থেকে আট মিনিট পরপর এক একটি ট্রেন সচিবালয়ের স্টেশনে এসে থামছে। কিন্তু ট্রেনগুলোতে চড়ার মতো কোনো অবস্থা নেই। প্রতিটি ট্রেন যাত্রীবোঝাই হয়েই সচিবালয় স্টেশনে আসছে। ফলে প্ল্যাটফর্মে যদি ২০০ জন যাত্রী থাকেন, তবে তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৭০-৮০ জন যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারছেন। বাকিদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরের ট্রেনের জন্য। এরই মধ্যে অন্তত আরও ২০০ জন যাত্রী প্ল্যাটফর্মে চলে আসছেন। ইফতারের আগে এমনই চাহিদা হয়েছে মেট্রোরেলের।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হয়। দিন দিন মেট্রোরেল নগরবাসীর আস্থার ঠিকানা হয়ে উঠছে।
এদিকে, সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মহাখালী, বনানী, গুলশান, বাড্ডা, হাতিরঝিল, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মতিঝিল, বেইলি রোড, মগবাজার, পল্টন ও গুলিস্তান এলাকায় দেখা যায়, এসব সড়কে তীব্র যানজট। বাসে থাকা অনেক যাত্রী যানজটের কারণে হেঁটে যাচ্ছেন। এসব সড়কে বাড়তি গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের।
রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওপরে মেট্রোরেল আর নিচে গাড়ির যানজট। যানজটের কারণে অনেককেই মেট্রোরেলে যেতে দেখা গেছে। তবে রিকশাসহ ছোট-বড় গাড়ির জন্য সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর হাতিরঝিলে যানজট এড়িয়ে স্বস্তিতে যাতায়াত করেন সবাই। তবে ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে হাতিরঝিলেও তীব্র যানজট। হাতিঝিলে চলাচলকারী সিএনজিচালক আহমেদ কামাল জানান, নতুনবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে পুরান ঢাকায় যাচ্ছি। তবে হাতিরঝিলে যে যানজট তাতে ইফতারের আগে যেতে পারবো কি না জানি না।
বেইলি রোড এলাকায় হেঁটে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান বাশার নামের একজন যুবক। তিনি বলেন, বেইলি রোডে এত গাড়ি আর সড়কে দোকান তাতে হেঁটেই যাওয়া মুশকিল। গাড়ি আটকে অন্য সড়কে যানজট ছড়িয়েছে।
কালের আলো/এমএইচ/এমকে