ডাক্তার ছাড়াই চলছে সাতক্ষীরা সদর প্রাণিসম্পদ অফিস

প্রকাশিতঃ 2:42 pm | March 04, 2025

সাতক্ষীরা প্রতিবেদক, কালের আলো:

দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তারবিহীন চলছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস। এতে পশুপাখির চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন সেবায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় খামারি মালিকেরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অফিসে গিয়েও কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ সময়ই কর্মকর্তারা বাইরে থাকার কথা বলেন। এছাড়া সরকারি ভ্যাকসিন সহজলভ্য নয়, যা পাওয়া যায় তাতেও টাকা দিতে হয়।

একজন স্থানীয় কৃষক বলেন, ‘আমরা পশুপাখির চিকিৎসার জন্য এখানে আসি, কিন্তু প্রয়োজনীয় সেবা পাই না। অফিসে গেলে কর্মকর্তারা নানা অজুহাত দেখান। এমনকি আমাদের ঠিকমতো মূল্যায়নও করা হয় না।’

এদিকে শিক্ষার্থীরাও একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে আসা শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইশা বলেন, এখানে কোনো ডাক্তারই নেই। আমরা জানতে চাইলে কর্মকর্তারা শুধু বলেন ডাক্তার বদলি হয়ে গেছে, কিন্তু নতুন ডাক্তার কবে আসবে তা কেউ জানেন না। প্রতিবারই এসে হতাশ হতে হয়।

শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমি কিছুদিন আগে আমার কুকুরের জন্য ভ্যাকসিন নিতে এসেছিলাম। কিন্তু ভ্যাকসিন দেওয়ার পর তারা টাকা চাইল। আমি বললাম, এটা তো সরকারি, তাহলে টাকা কেন? তারা বলে ২০ টাকা হলেও দিতে হবে। এটা খুবই দুঃখজনক, সরকারি হাসপাতালে এমন অনিয়ম কেন হবে?

এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন, যিনি অধিকাংশ সময় অফিসে থাকেন না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিষ্ণু পদ বিশ্বাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মূলত সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসে কোনো ডাক্তার নেই। দুটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। একমাত্র ডাক্তার ছিলেন, তিনিও এক মাস আগে চলে গেছেন। ফলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার নিজেও ডাক্তার নন। তাই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে দ্রুতই পদগুলো পূরণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাব।

সাতক্ষীরার প্রাণিসম্পদ খামারিরা দ্রুত ডাক্তার নিয়োগ ও সরকারি সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর যেন নিয়মিত সেবা দিতে পারে এবং দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর হয়।

কালের আলো/এমডিএইচ