ইতিবাচক ধারায় রপ্তানি আয়

প্রকাশিতঃ 10:34 pm | March 04, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

সব অস্থিরতার ধকল কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের রপ্তানি খাত। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৭৭ শতাংশের বেশি। গত মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার। শুধু তাই নয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে রপ্তানি আয়ের সূচকে প্রবৃদ্ধি ছিল লক্ষ্যণীয়।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে মিলেছে এসব তথ্য। ইপিবি বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৮৬ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার।

এদিকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ২ হাজার ৯৮১ কোটি ডলার।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের রপ্তানি আয়ের বড় অংশ আসে পোশাক খাত থেকে। ফেব্রুয়ারি মাসে পোশাক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে পোশাক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে পোশাকের নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। তবে ওভেন খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একক মাস হিসাবে ফেব্রয়ারিতে ওভেন পোশাকের রপ্তানি কমেছে দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে পোশাকের নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশ ও ওভেনে প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। এছাড়া, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম আট মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত মাছ ও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে।

রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছে, তবে শিল্প খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো বিদ্যমান, যা এই পরিসংখ্যানে পুরোপুরি প্রতিফলিত হচ্ছে না বলে জানান বিশ্লেষকরা।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সংকুচিত হওয়ার ফলে তীব্র মূল্য প্রতিযোগিতা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের জন্য কিছু সুযোগ সৃষ্টি হলেও জ্বালানি নিরাপত্তা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

একই বিষয়ে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রপ্তানির অর্ডার বাড়লেও উৎপাদন ব্যয়ের চাপ রপ্তানিকারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল্যের প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

কালের আলো/আরআই/এমকে