দুর্নীতির মামলা থেকে মোহামেডানের সাবেক পরিচালক লোকমানের অব্যাহতি

প্রকাশিতঃ 6:15 am | March 06, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের সাবেক পরিচালক লোকমান হোসেন।

৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন ও প্রায় ৫৭ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে চার্জশিট দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ওই মামলায় গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত থেকে দেওয়া রায়ে বেকসুর খালাস পেয়েছেন লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। বুধবার (৫ মার্চ) দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক ও মোহামেডানের সাবেক ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ দুদক যত অভিযোগ এনেছিল তার পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ দিতে পারেনি।

রায়ে বলা হয়, আসামি মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিকে নির্দোষ সাব্যস্ত করে বেকসুর খালাস প্রদান করা হলো।

এ বিষয়ে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের যে অভিযোগ করা হয়েছিল তার প্রমাণাদি আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে লোকমান হোসেন ভূঁইয়া কোনো মানি লন্ডারিং করেননি। ক্লাবের হলরুম ভাড়া দেওয়ার অর্থ ক্লাবের হিসাবেই জমা হয়েছে এবং তার অডিটও জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। তাই আদালত লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিপক্ষে আনা অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় দুদক। তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগ দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া লোকমান হোসেন ভূইয়া তার স্ত্রী নাবিলা লোকমান ও ছেলে লাবিব জুহায়ের হোসেনের নামে অস্ট্রেলিয়ার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ (এএনজেড), কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া (সিবিএ) ও জেস্ ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংক লিমিটেড (এনএবি) নামের তিন ব্যাংকের সাতটি ব্যাংক হিসাবে অস্ট্রেলিয়া ও দুবাই থেকে প্রায় এক লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার নগদে ও ট্রান্সফারের মাধ্যমে জমা করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে  বাংলাদেশি টাকায় (প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ডলার=৫৭.৬৩ টাকা) ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮০ টাকা পাচার করেছেন। ওই টাকা তিনি অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জন ও পাচার করে অস্ট্রেলিয়ার ওই ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সংস্থাটির তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

কালের আলো/এসএকে