যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনও ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত চীন
প্রকাশিতঃ 11:41 am | March 06, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। দেশটি সতর্ক করে বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনও ধরনের যুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত করার পর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে এই হুঁশিয়ারি দিলো বেইজিং। বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ট্রাম্প সকল ধরনের চীনা পণ্যের ওপর আরও শুল্ক চাপানোর পরে বৈশ্বিক অর্থনীতির শীর্ষ এই দুটি দেশ বাণিজ্য যুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। ট্রাম্পের সেই সিদ্ধান্তের পর চীন বেশ দ্রুতই মার্কিন কৃষি পণ্যের ওপর ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে প্রতিশোধ নিয়েছে।
চীনের দূতাবাস গত মঙ্গলবারের সরকারি বিবৃতি থেকে একটি লাইন পুনরায় পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছে, “যদি যুক্তরাষ্ট্র চায় তা যে যুদ্ধই হোক, শুল্ক যুদ্ধ, বাণিজ্য যুদ্ধ বা অন্য কোনও ধরনের যুদ্ধ হোক, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত।”
গত জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এটিই এখন পর্যন্ত চীনের পক্ষ থেকে দেওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী বক্তৃতা এবং সেটিও আবার এমন এক সময়ে দেওয়া হলো যখন ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনের জন্য বেইজিংয়ে জড়ো হয়েছেন নেতারা।
এদিকে বুধবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ঘোষণা করেছেন, চীন এই বছর আবার তার প্রতিরক্ষা ব্যয় ৭.২ শতাংশ বাড়িয়ে দেবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “এক শতাব্দীতে অদেখা পরিবর্তনগুলো দ্রুত গতিতে বিশ্ব জুড়ে প্রকাশিত হচ্ছে”। চীনা প্রতিরক্ষা ব্যয়ের এই বৃদ্ধি প্রত্যাশিত এবং গত বছরের ঘোষিত পরিসংখ্যানের সাথে মিলে যায়।
বিবিসি বলছে, বেইজিংয়ের নেতারা চীনের জনগণকে একটি বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছেন যে— তারা আত্মবিশ্বাসী যে দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সেটাও এমনকি বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকির মধ্যেও।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে চীন নিজেকে একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ দেশ হিসাবে চিত্রিত করতে আগ্রহী। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউক্রেনে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগও করে থাকে বেইজিং।
বুধবার বেইজিংয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় চীন (বিনিয়োগবারীদের জন্য) উন্মুক্ত থাকবে বলে জোর দেওয়া হয় এবং আরও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে বলে আশা প্রকাশও করা হয়।
চীন অবশ্য অতীতেও জোর দিয়ে বলেছিল, তারা যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত। গত বছরের অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্ব-শাসিত তাইওয়ান দ্বীপের চারপাশে সামরিক মহড়া চালানোর সময় যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুতি জোরদার করতে সৈন্যদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সামরিক প্রস্তুতি এবং যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
কালের আলো/এমডিএইচ