স্বাধীনতার পর দুর্বল নেতৃত্বের কারণে দেশ দুর্নীতিতে ডুবেছে: ডা. তাহের
প্রকাশিতঃ 7:32 pm | March 12, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, স্বাধীনতার পর লি কুয়ানের মতো দেশপ্রেমিক নেতা পাওয়ায় সিঙ্গাপুর উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ পেয়েছে দুর্বল নেতৃত্ব, দুর্নীতিতে ডুবে ছিল দেশ। ফলে বাংলাদেশ গত ৫৪ বছরেও দুর্নীতি মুক্ত হতে পারেনি।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) বিএসএমএমইউ আয়োজিত গ্র্যান্ড ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন— ঢাকা মহানগরী (দক্ষিণ) জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। এনডিএফ বিএসএমএমইউ’র সভাপতি ডা. মো. আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন— বিএসএমএমইউ’র সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত সুমন, ডা. এমজি ফারুক। এনডিএফ’র ইফতার মাহফিলে জুলাই আন্দোলনে আহতদের প্রায় ৪০ জন বিশেষ অতিথির সম্মাননা দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ইফতার মাহফিলের শুরুতেই রোজার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. মতিয়ার রহমান। সঞ্চালনা করেন বিএসএমএমইউ এনডিএফ’র সেক্রেটারি ডা. মো. শাহাদাত হোসেন।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের উপস্থিত চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেখানে দুর্নীতি সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নৈতিকতা চর্চায় চিকিৎসকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনারা একজন শুরু করলেই অন্যেরা আপনাদের অনুসরণ করবে।
তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, একজন রোগী ফি দিলে তিনি ডাক্তারের নির্দিষ্ট সময় কিনে নেন। এ সময়ের মধ্যে রোগীর সব কথা চিকিৎসক শুনতে বাধ্য।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের ওপর ধর্ম নিরপেক্ষতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে গত ৫৪ বছর এ দেশে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চেয়েছে তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ভরেছে, ফাঁসি দিয়েছে। জামায়াত যেন স্বাভাবিকভাবে ইসলামে কায়েমে কাজ করতে না পারে সে কারণে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। হয়রানির মাত্রা এতো বেশি ছিল যে তাদের মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইসলাম কায়েমের অপরাধে তাদের চরমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তরুণ সম্প্রদায়ের নৈতিক শক্তি ধ্বংসে সব ধরনের কাজ করেছে ক্ষমতাসীনরা।
তিনি বলেন, যেখানে ১শ’ জন মদ্যপায়ী ছিল সেখানেই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ইসলাম প্রিয় মানুষকে দমাতে জঙ্গিবাদের ধোয়া তুলে নির্যাতন করা হয়েছে। বিগত ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা সবাই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল।
জুলাই আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে তরুণদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এখন স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। কিন্তু আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত হচ্ছে। ৫ আগস্টের চেতনা ছিল ন্যায় বিচার (উই ওয়ান্ট জাস্টিস), দিল্লীর আধিপত্যবাদ রুখে দাঁড়ানো (দিল্লী নয়, ঢাকা ঢাকা), আপসকামিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দেশবাসীকে সংগ্রামের আহ্বান জানানো। ৫ আগস্ট বাংলাদেশের তরুণরা দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করে মানবিক বাংলাদেশ করতে চেয়েছে। নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট একক কোনো ব্যক্তি নয়, দলের নয়, এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড ছিল শহীদেরা এবং যারা আহত হয়েছে তারা। কিন্তু আন্দোলনটি পকেটস্থ করার হীন চেষ্টা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার না হলে নির্বাচনে কারচুপি বন্ধ করা যাবে না। বর্তমান সরকারের উচিত নির্বাচন ব্যবস্থায় এমনভাবে সংস্কার করা যেগুলোতে দলীয় আসলেও যেন হাত না দিতে পারে।
কালের আলো/এএএন