অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

প্রকাশিতঃ 9:40 pm | March 14, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:

নারী নির্যাতন-নিপীড়নসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেন, সাংবাদিকদের সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ইফতার মাহফিলে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি বলতে চাই, উন্নয়নের যতটুকু সম্ভাবনা ছিল, অতীতে দেশ যারা পরিচালনা করেছেন, তারাই সম্ভাবনাটাকে কাজে লাগাতে পারেননি। রাজনীতির স্লোগানটা যদি সত্যিই এমন হয়ে তাকে যে আমার চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, তাহলে দেশের স্বার্থটাই বড় করে দেখার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে রাজনীতিবিদরা তাদের কর্মকাণ্ডে সেটা করেননি।

সাংবাদিকরা সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার যদি ঘাটতি হয় তাহলে সমাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সামনের দিকে যায়, হামাগুড়ি দিয়ে যায়। দৌড়ে সামনের দিকে বা গন্তব্যের দিকে যেতে পারে না। বাংলাদেশের অবস্থা বাস্তবে এটিই হয়েছে। এ অবস্থায় রাজনীতিবিদদের অবশ্যই আত্মসমালোচনা প্রয়োজন। তার পাশাপাশি গণমাধ্যমে যারা আছেন তাদের বুক টান করে দাঁড়ানো দরকার।

মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যুতে শফিকুল রহমান বলেন, শিশুটি বৃহস্পতিবার সবাইকে কাঁদিয়ে দিয়ে চলে গেল। মির্জা আব্বাস ভাই বলেছেন- ‘এরকম আরও বহু হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে।’

ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের ভালো-মন্দ রাজনীতিবিদরা ২৫ ভাগ বহন করে। আমি এটা মনে করি। আর ৫০ ভাগ বহন করে সাংবাদিকরা। সুতরাং আপনারা যদি সঠিক কথা বলেন তাহলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। সাংবাদিকরা কেন লেখে না যে, অমুক অমুক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অমুক অমুক রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক রয়ে গেছে, আছে। কখনো ১৫০০ কোটি টাকা, কখনো ১০০ কোটির কথা শুনি আমরা। কেন আপনারা এগুলো লেখেন না?

সাগর-রুনি হত্যা মামলার চার্জশিট ১১৬ বার পেছানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা কয়বার এই নিউজ লিখেছেন? শুধু যখন চার্জশিট পেছানো হয় তখন ছোট করে নিউজ লিখে দেন! এই যে মাগুরার শিশুটি পুরো দেশটা কাঁদিয়ে বৃহস্পতিবার চলে গেল, আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শিশুটির সম্পর্কে আপনারা লিখেছেন। খুব ভালো। কিন্তু এরকম শিশু কি আর বাংলাদেশে নাই কিংবা শিশুটির চেয়ে করুন আর কোনো ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি? এই দেশে কি তনু হত্যা হয় নাই? মুনিয়া ধর্ষণ হয় নাই? আপনারা কেন লেখেন না? কারণ আপনাদের সাংবাদিকদের অনেকেই জায়গা মতো বসে আছে। ওখান থেকে অনেকেই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাই লেখা হয় না। লেখা হবে না!

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মাহী বি চৌধুরীসহ সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

এছাড়াও এ আয়োজনে ডিআরইউ’র সহ সভাপতি গাযী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক খান, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ), কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির), আক্তারুজ্জামান, মো. সলিম উল্ল্যাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এসএকে