সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে যুক্তিবর্জিত চিন্তাধারা, কুৎসিত আক্রমণ ও আত্মঘাতের পথ
প্রকাশিতঃ 10:53 am | March 17, 2025

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :
মুক্তচিন্তা আর বাকস্বাধীনতা পরিপূরক। এর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে গণতন্ত্রের চেতনা। দার্শনিক সক্রেটিস আর বিতর্কের জনক হিসেবে পরিচিত প্রোটাগোরাসের বুদ্ধিদীপ্ত তর্কযুদ্ধের মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল আধুনিক বিতর্কের। যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের যুক্তিকে দুর্বল করে নিজের মতকে জোরালোভাবে উপস্থাপনার প্রচলিত ধারাটিও বর্তমান সময়ে বেশ প্রাসঙ্গিক। জুলাই বিপ্লব একটি নতুন স্বপ্ন ও নতুন বাস্তবতার ভিত রচনা করেছে। অপছন্দের বক্তব্যকে প্রকাশ্যে বা নেপথ্যে নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধ করার চিরায়ত ধারার যবনিকাপাত ঘটেছে। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই এই সময়টিতে সব বিষয়ে বিতর্ক একটি সংবঘবদ্ধ রূপ নিয়েছে। মননে ও ব্যক্তিত্বে যুক্তিবাদী হওয়ার পরিবর্তে একগুয়েমি, কূপমণ্ডুকতা আর অন্ধ বিশ্বাসের হাতছানিতে বিভোর অনেকেই লিপ্ত ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায়। কোন কোন ক্ষেত্রে সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর কোন প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে অসহিষ্ণু মানসিকতা নিয়ে অযৌক্তিক যুক্তিবর্জিত চিন্তাধারায় প্রবণতা লক্ষণীয়। নিরঙ্কুশ ও নি:স্বার্থ স্বাধীনতার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে মত প্রকাশের নামে কুৎসিত, হিংস্র, ভয়ঙ্কর, সর্বৈব ও আগ্রাসী মিথ্যার বহি:প্রকাশ সারা জাতিকে হতবাক ও স্তম্ভিত করেছে।
খিস্তিখেউড় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের মাধ্যমে কেউ কেউ নিজের হীন মানসিকতাকে প্রতিফলিত করছেন। এতো শোরগোল, হিংসা, কুৎসিত আক্রমণ, বিদ্রুপাত্মক শ্লেষ, অযৌক্তিক ও অপরিণামদর্শী শব্দবাণের মাধ্যমে সবাই যেন ভুলতে বসেছে প্রতিটি দেশের মতো বাংলাদেশেরও অস্তিত্ব ও রক্ষাকবচ এই সশস্ত্র বাহিনীই। বিরোধিতা আর শত্রুতা কখনও এক কথা নয়। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডত্বের রক্ষক ও জাতির গর্বিত প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে কুকথা, নোংরা কথা, গালাগাল ইত্যাদির বাম্পার ফলনে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠেছে, যে মত প্রকাশের ফলে দেশের ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকে, তা অবাধে প্রকাশের স্বাধীনতা কী থাকা উচিত? এই প্রশ্নটিকে আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতায় বিচ্ছিন্ন করে দেখবার সুযোগ নেই মোটেও। যারা এসব করছেন তারা নিজেদের অনেক বেশি পণ্ডিত, ধীমান ও অধিকতর যোগ্য মনে করেন।
পারিবারিক কূটনীতিবহুল সান্ধ্যকালীন টিভি সিরিয়ালে আসক্ত লোকদের কুটনামির মতোই তাঁরা আনন্দ পাচ্ছেন। যুক্তির অনুশীলনের ন্যূনতম চর্চা না থাকলেও নিজের খেয়াল খুশিমতো মত প্রকাশে মরিয়া হয়ে ওঠছেন। ইউটিউব, ফেসবুকসহ সোশ্যাল হ্যান্ডেলে চোখ মিলে তাকাতেই এসব ঘটনার অহরহ প্রমাণ মিলছে। বরাবরই নিরপেক্ষতা ও সততার ধারক-বাহক বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে মর্জিমাফিক গল্প বা বয়ান তৈরি করে দেশপ্রেমিক বাহিনীটির উঁচুমানের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এক প্রকার বিদ্বেষ ও মস্তিষ্কপ্রসূত কল্পনার শক্তিতে তশরিফ রাখার মতোই একেবারে কাছি মেরে লেগেছেন তাঁরা। এমন মুষ্ঠি পাকিয়ে, গলার শিরা ফুলিয়ে আস্ফালনের হেতু জানা নেই কারও। তাই কান নিয়েছে চিলের মতো সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে তাঁরা করে চলেছে কেবলই নিন্দা আর বিবিধ বিষোদ্গার। এক্ষেত্রে অনেকে গোবেচারা দর্শক, গা বাঁচিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে ‘অবলোকনকাম চরিতার্থ’ করছেন। কেউ পক্ষ চিল হয়ে ছোঁ মারছে। অন্যপক্ষ বেকায়দায় পড়ে কাক হয়ে কা কা করছে। কাক ও চিলের কাড়াকাড়ির অনেক ওপরে চক্কর দিচ্ছে শকুনের ঘোলাটে চোখ। এসব দেখেও আমরা না দেখার ভান করছি, চুপ করে বসে থাকছি।
ভিন্নমতের প্রতি অবশ্যই শ্রদ্ধা থাকবে। কিন্তু এর নামে গুজব বা বিভ্রান্তি সশস্ত্র বাহিনীর মর্যাদাকে বহুলাংশে ক্ষুণ্ন করতে পারে। দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ভয়ানক ক্ষতি ডেকে আনে এমন জ্ঞানপাপীরা অনাকাঙ্ক্ষিত, অগ্রহণযোগ্য ও সর্বোতভাবে পরিত্যাজ্য। এই ক্ষতিকর জ্ঞান চেনার একমাত্র উপায় কাণ্ডজ্ঞান। কিন্তু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের কাণ্ডজ্ঞানের কতটুকু প্রয়োগ করছি, এমন প্রশ্নও উঠেছে জনেজনে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ড ও মানচিত্র অক্ষুণ্ন রাখতে অপরিহার্য সশস্ত্র বাহিনী। জনজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবময় ও আলোকোজ্জ্বল ইতিহাস বহমান নদীর মতো। আমাদের সাহস আর অস্তিত্বের উৎসও সশস্ত্র বাহিনী। দেশের প্রতিটি দুর্যোগে-সঙ্কটে সশস্ত্র বাহিনী কখনও পথ হারায়নি। ‘সবার আগে দেশ’- এই নীতি থেকেই তাঁরা জনগণের জন্য বুক পেতে দাঁড়িয়েছে সামনে। জনগণের বিপক্ষে কখনও অবস্থান গ্রহণ না করায় এই বাহিনীটির প্রতি জাতির নির্ভরশীলতা অপরিসীম। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে শুরু করে দেশের এক-দশমাংশ অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষার মাধ্যমে দেশের অখণ্ড সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে। রক্ত দিয়েছে, উৎসর্গ করেছে জীবন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক’দিন আগে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করেছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দায়িত্বরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সম্মান জানিয়ে বলেছেন, ‘কঠিন অপারেশনে বাংলাদেশি বাহিনীর অসামান্য উদারতা আমাদের কাছে কৃতজ্ঞতা পাওয়ার দাবিদার।’
জাতির প্রয়োজনে যে কোনো কঠিন দায়িত্ব পালনে সশস্ত্র বাহিনীর নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা অনন্য এবং অনবদ্য। বাংলাদেশের সমান বয়সী তিপ্পান্ন বছরে নব্বইয়ের মতো চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও সরকারের তখতে তাউশ কেঁপে ওঠে যখন সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী জনগণের বুকে গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়। টিকে থাকার দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এরশাদ-হাসিনার পতন। নব্বইয়ের পর চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে স্বার্থক মোড় দিতে সশস্ত্র বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আজ স্বীকৃত এবং প্রশংসিত। ওই সময়ে তাঁরা অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতাকে দমন করেনি। উল্টো পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-জনতাও তাদের বুকে টেনে নিয়েছে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মতোই সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ন্যায্যতা ও বাকস্বাধীনতার অঙ্গীকারের এই গণঅভ্যুত্থান কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছিল। হাজার প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া এই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে এর মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বহুত্ববাদী দেশ গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের সঙ্গে ওই সময় যেভাবে একীভূত হয়েছিল, সেই ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উদ্দীপক হিসেবে জাগিয়েছে আলোর দিশা। গড়ে উঠেছে সেনা-ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব দৃঢ় ঐক্য। কিন্তু নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর চেষ্টার মধ্যেই এই ঐক্যকে বিনষ্ট করতে অপতৎপরতা শুরু হয়েছে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে। সব সুস্থ বদন নিমিষেই অমলিন হচ্ছে।
মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রশ্নে সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষায় চিড় ধরাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান থেকে শুরু করে বাহিনীটির উচ্চপদস্থ জেনারেলদের নামে মিথ্যা প্রচার-প্রোপাগান্ডা আর কুটনামি আত্মঘাতের পথ প্রশস্ত করছে। কদর্যতর হুমকি দিয়ে ও অপযুক্তিতে বশ করার প্রবণতা দৃশ্যমান হচ্ছে। আলটপকা এমন হম্বিতম্বি সর্বগ্রাসী সংক্রামক ব্যাধিতুল্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অপতথ্য-অপপ্রচারকে বিশ্বাসযোগ্য করার কোশেশও চলছে। যা ঘটেছে বা ঘটছে তা কেবল অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। কোনোভাবেই এসব কাম্য নয়। বিষয়টি দেখতে হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। বিশ্বপরিমণ্ডলে গৌরবের প্রতীক বাহিনীটিকে নিয়ে অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর সব তর্ক-বিতর্ক কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না। সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কিছু করাও সমীচীন নয়। এমনটি ঘটতে থাকলে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতাও বিলীন হতে বাধ্য।
রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। জনগণের কল্যাণের জন্যই বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী হাকডাঁক না মেরে নীরবে-নিভৃতে কাজ করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন এর নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য রয়েছে। দেশের এই সঙ্কটময় মুহুর্তে সশস্ত্র বাহিনীর নিজেদের ওপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করছেন। সশস্ত্র বাহিনী দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি। কারও বাকস্বাধীনতার ওপরও হস্তক্ষেপ করেনি। দেশবাসী ও বিশ্ববিবেক সৎ, সাহসী ও দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে আছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- আপনি গুজবের সঙ্গে থাকবেন, নাকি সত্যবাদী ধারার প্রতি থাকবেন, সেটা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশের শাসনব্যবস্থাকে কার্যকর করতে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। এক্ষেত্রেও সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে আইনের শাসন ও মানবাধিকার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছে। এরপরেও অনেকেই মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক তথ্যে হামলে পড়েছেন, নখদন্ত বিকশিত করে গোটা বাহিনীর ওপর ছড়িয়ে দিয়েছেন রক্তাক্ত অক্ষর। ওদের নীতি-নৈতিকতার এহেন স্খলন, হেলায় আত্মমর্যাদার এমন বিসর্জন ও মানবিক মূল্যবোধের এই অতল অবনমন ভারাক্রান্ত করছে প্রতিটি বিবেকমান মানুষের হৃদয়। খ্যাতনামা বাঙালি মননশীল লেখক নীরদ সি চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেছিলেন ‘আত্মঘাতী বাঙালি’।
কিন্তু আমরা যে ‘আত্মঘাত’কে রীতিমতো ‘সংস্কৃতি’তে রূপান্তর করে ফেলেছি। ঠিক তেমনি সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে তাদের বক্তব্য ব্যক্তিগত ঈর্ষা কাতরতার প্রতিচ্ছবি। নির্দয় ও অবিবেচকী এসব বক্তব্য আর মিথ্যা ও অর্ধসত্যের জালের মধ্যেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দেশপ্রেমী কিরণের দ্যুতি কমেনি একটুকুও। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশের প্রতি ভালোবাসায় নিষ্ঠা, সততা ও গর্বের সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সব অর্জন একদিনে হয়নি। তিল তিল শ্রম, মেধা ও চিন্তার প্রখরতায় ব্যাপ্তি ঘটিয়েছেন। আপন মহিমায় তৈরি করেছেন সৃষ্টিশীলতার ঠিকানা। স্বপ্নকে দিয়েছেন নতুন রূপ। আলোর দিশারি হয়ে পথ চলেছেন নিজের গতিতে। দেশে দেশে ছড়িয়েছেন আলোর শিখা। স্বপ্ন দেখতে, দেখাতে ও জয় করতে জানেন বাঙালি জাতির ‘প্রাণভোমরা’ সশস্ত্র বাহিনীই।
আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আর গর্ব-অহংকারের প্রতীক এই সশস্ত্র বাহিনীর গায়ে বিন্দুমাত্র কালিমা লাগে আমরা যেন এমন কিছু না করি। আমাদের মনে যেন বেজে ওঠে- ‘মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি।’ যারা চোখ মেলে বাস্তব দেখে ‘সত্য’ স্বীকারের সাহস রাখেন না তাদের জন্যই বোধ করি কবি উচ্চারণ করেছিলেন- ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে/তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।’ একবার ভাবুন তো কবির এই প্রার্থনা মঞ্জুর হলে সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে গোয়েবলসীয় কায়দায় প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো এই মুখোশধারীদের কী দশা হতে পারে? মনে রাখতে হবে দেশপ্রেমিক সশস্ত্রবাহিনীর সঙ্গে এদেশের মানুষের সম্পর্ক হৃদয়ের, নিবিড় ও অকৃত্রিম। আসুন, দেশের এই সঙ্কট উত্তরণে আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি, তাদের বিরক্ত না করি।
কালের আলো/এমএএএমকে