আলোকময় উজ্জ্বল ভবিষ্যত উপহারে শিক্ষার মানোন্নয়নে নজর শিক্ষামন্ত্রী’র
প্রকাশিতঃ 5:51 am | April 22, 2019
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
মা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন শিক্ষক। নিজেও শিক্ষা জীবনে ছিলেন দেশসেরা একজন বিতার্কিক। দেশ-বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়েছেন। দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর তাঁর হাত ধরেই প্রথম কোন নারী শিক্ষামন্ত্রীও পেয়েছে দেশ।
মন্ত্রীসভায় এক ঝাঁক নতুন মুখের ভিড়ে অভিজ্ঞ মন্ত্রী হিসেবেও আলোচিত ডা: দীপু মনি। দায়িত্ব গ্রহণ করেই বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যাশা পূরণে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করার অঙ্গীকার করেছিলেন।
আরো পড়ুন: প্রশ্নফাঁস ঠেকিয়ে ‘পরীক্ষায় উত্তীর্ণ’ শিক্ষামন্ত্রী!
সরকারের জন্য অনিবার্য ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ানো প্রশ্নফাঁস বন্ধ করে শুরুতেই প্রশংসা কুড়িয়েছেন। আলোকময় উজ্জ্বল ভবিষ্যত উপহার দিতে শিক্ষার মান উন্নয়নেও নজর দিয়েছেন। গুরুত্বারোপ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি, গবেষণা এবং ভাষা ও গণিতে মনোযোগ বাড়ানোর ওপর।
ভালো ফলাফলের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীকে দেশপ্রেম, সততা, নৈতিকতা ও মানবতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়ারও মন্ত্র শেখাচ্ছেন। বিশ্লেষকরাও বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে রয়েছে বাস্তবতার নির্যাস। অকাট্য যুক্তি নির্ভর হয়ে উঠে তাঁর বক্তব্য। সময়কে ধারণ করেই তিনি পথ চলেন।’
অন্যের ভাব, শব্দ বা কথা নিজের বলে চালিয়ে দেওয়ার বিষয়েও উচ্চকন্ঠ হয়েছেন বিশিষ্ট রাজনীতিক দীপু মনি। সৃজনশীলতার ওপর জোর দিয়ে অন্যের থেকে নকল করা বা কপি-পেস্ট থেকে বের হতে বলেছেন। সৃজনশীলতার মাধ্যমেই মেধার বিকাশ ঘটাতে বলেছেন শিক্ষার্থীদের।
উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবীও। চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে হ্যাট্টিক করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে সমুদ্র জয়ের নেতৃত্ব দিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন।
আরো পড়ুন: মহিয়সী বঙ্গমাতায় ‘একাকার’ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী
ঝানু এ মন্ত্রী বিশ্বাস করেন শিক্ষকদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা পেয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। নিজের দেশ সারাবিশ্বে মাথা উচু করে মর্যাদা নিয়ে দাঁড়াবে এবং কোনো দেশের কারো কাছে মাথা নত করবে না, দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন মন্ত্রী।
নিজের মা শিক্ষকতার মতো একটি মহান পেশায় ছিলেন বলেই পরিবার থেকেই তিনি শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়টি উপলব্ধি করেন। শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যবই যত্মসহকারে শেখানো হলে, পাঠদানে অযত্ন-অবহেলা না হলে শিক্ষার্থীদের নোট বই, গাইড বই ও প্রাইভেট-কোচিংয়ের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না।
গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে শরীয়তপুরে একটি কলেজের পুনর্মিলনী উৎসবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে শিক্ষা খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ অর্জনের ওপর ভিত্তি করে আগামী দিনে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য শিক্ষার মান আরও উন্নত করতে হবে।
আরো পড়ুন: ১২০ দিনে কী ‘অর্জন’ প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি’র?
শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করতে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি মনে করেন, শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। দেশের কল্যাণে সমৃদ্ধ জাতি গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সুনাগরিক হিসেবেও নিজেদের গড়ে তুলবে।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শেখানোর পদ্ধতি বই নির্ভর হওয়ায় এটাকে আরও বাস্তব অভিজ্ঞতা নির্ভর করার কথাও ভাবছেন মন্ত্রী। কোন বিষয় সঠিকভাবে বোঝা, হৃদয়ঙ্গম করা, নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করা, নিজের মধ্যে মানবিক গুণাবলি ও নেতৃত্বের গুণ প্রতিষ্ঠা করা একজন শিক্ষার্থীর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসা দীপু মনি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকেই অনুধাবন করেন এসব বিষয়াদি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও ভাষাবীর এম.এ.ওয়াদুদের এই রক্তের উত্তরাধিকার চৌর্য্যবৃত্তি সব বিষয়েই সকল সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টিও সবার নজরে এনেছেন।
রোববার (২১ এপ্রিল) বিপিও সামিট’র প্রথমদিনে এক গোল টেবিল আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন কপি-পেস্টের মানসিকতা পরিহার করতে।
এই সময়টাতে সৃজনশীলতাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তরুণরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। আমাদের বিশাল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে চাই। এরজন্য বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা আমরা প্রণয়ন করতে হবে।’
কালের আলো/এই/এএএমকে