বিয়ের প্রশ্নে ‘কৌশলী’ শোভন, মাদকের বিষয়ে রাব্বানী’র ভাষ্য ‘অপপ্রচার’
প্রকাশিতঃ 3:41 am | May 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন কী বিবাহিত? ফেসবুকে ঘুরছে তাঁর স্ত্রী’র সঙ্গে ছবি! টানা দুই দিন যাবত এ নিয়ে তুলকালাম হওয়ার পর রহস্যময় নীরবতা পালন করেছেন তিনি।
ইনিয়ে-বিনিয়েও কোন উত্তর দেননি। উৎসুক গণমাধ্যম কর্মীরা ফোন দিলেও ধরেননি। এড়িয়ে গেছেন বারবার।
আরো পড়ুন: সিদ্ধান্ত বদলালেন শোভন-রাব্বানী, ‘পদ’ হারাচ্ছেন ১৭ নেতা-নেত্রী
অবশেষে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে ‘অপ্রিয়’ এ প্রশ্নেরই মুখোমুখি দাঁড়াতে হলো তাকে। এক রমণীকে নিয়ে ঝর্ণার পাশে তাঁর ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবিগুলোর আলোকেই সংবাদকর্মীরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন শোভনকে।
উত্তরে দিতে গিয়ে কৌশলী এ নেতা পাল্টা প্রশ্ন করে বললেন, ‘ছাত্রলীগ করলে কী বান্ধবী থাকতে পারবে না?’
শোভনের এ উত্তর মন ভরাতে পারেনি অনেকেরই। কারণ নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্কের শুরু থেকেই দলীয় ক্ষুব্ধ একাংশের নেতা-নেত্রীরা সুস্পষ্টভাবেই অভিযোগ করে আসছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি নিজেই গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন, তিনি বিবাহিত।
এ প্রীতি থেকেই বিবাহিত নারীদের পদ দিয়েছেন।
পরে কথিত ওই নারীর সঙ্গে শোভনের মোটামুটি ঘনিষ্ঠ ছবি কে বা কারা ফেসবুকে ভাইরাল করে। যদিও ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘বান্ধবী থাকতে পারবে না, এমনটি ছাত্রলীগের কোথাও নেই।
পদ চলে গেলে জানতে পারবেন সে কে?’ এ কথার মধ্যে দিয়ে শোভন কী ইঙ্গিত করলেন, এমন প্রশ্নও উঠেছে।
‘পদ চলে গেলে জানতে পারবেন সে কে?’ এমন কথা বলে প্রকারান্তরে তিনি কী বোঝাতে চাইলেন যে, পদ হারানোর আশঙ্কায় থেকে এখন স্পষ্ট জবাব দিতে পারছেন না। ছবির রহস্য উদঘাটনে পদ ছাড়ার সময় অবধি অপেক্ষা করতে হবে?
সমালোচকদের কেউ কেউ নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন, হানিমুনের ছবি আড়াল করতেই কী ‘কৌশলী’ জবাব দিয়ে পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি?
তবে তাদের এ প্রশ্নের উত্তর জানতে ছাত্রলীগ সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অবশ্য তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, ছাত্রলীগ সভাপতি এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনেই সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছেন। ষড়যন্ত্রকারীদের আর হালে পানি পাওয়ার সুযোগ নেই।’
এদিকে, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী’র বিরুদ্ধেও ‘স্পর্শকাতর’ অভিযোগ উত্থাপন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিপি আক্তার।
কমিটি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজ সংগঠনের নেতাদের হাতে প্রকাশ্যে লাঞ্চিত হওয়া, পিটুনিতে আহত হওয়ার পর রাখঢাক না করেই একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে রাব্বানীর মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনেন তিনি।
ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটারিয়া বিষয়ক এ সম্পাদক সেদিন টকশোতে বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজেই মাদকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, উনি সেক্রেটারী হওয়ার আগে।
তাঁর তিন/চারটি রেকর্ডিংও আমাদের কাছে আছে। উনি যে ড্রিল করছেন বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে। এটা অলরেডি অনেকেই জানে।’
এ সময় উপস্থাপক পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এটার কী কোন ডকুমেন্টস আছে?’ এ সময় লিপি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘রেকর্ডিং আছে।’
খোদ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এমন ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগের বিষয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে দলীয় পরিমন্ডলে। এ সম্পর্কেই গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে রাব্বানীকে প্রশ্ন করেন মাদক সেবনের অভিযোগটি সম্পর্কে।
জবাবে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমি ২৪ বার রক্ত দিয়েছি। মাদকাসক্ত হলে রক্ত দিতে পারতাম না। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে।’
কালের আলো/এসএম/এএ