শিক্ষা টিভি চালু করার কথা ভাবছে সরকার : শিক্ষামন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 2:47 pm | July 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ভালো শিক্ষকদের ভালো ক্লাস পুরোদেশের শিক্ষার্থীদের শেখার সুযোগ করে দিতে সরকার শিক্ষা টিভি চালুর কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, ভালো শিক্ষকদের ক্লাসগুলো প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শেয়ার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসকরা। এজন্য ভালো মানের শিক্ষকদের অতিথি হিসেবে বিভিন্ন স্কুলে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। তবে আমরা ভেবে দেখেছি এটা অনেকাংশেই সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, পুরোদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস শেয়ার করার সুযোগ করে দিতে শিক্ষাটিভি চালু করার কথা ভাবছে সরকার। এই টিভির মাধ্যমে কেবল রাজধানী বা বড় বড় শহরের ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামী-দামী শিক্ষক নয়; প্রত্যন্ত এলাকার ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ক্লাসও শিক্ষাটিভির মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার(১৫ জুলাই) জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কার্-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। এসময় শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপন্থিত ছিলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীরা সব জায়গায় অর্থাৎ যে যেখানেই থাকুক একই মান, ধরনের ও উচ্চমানের শিক্ষকদের শিক্ষাদান-পাঠদানে উপকৃত হবে।’
‘আমরা এ বিষয়ে (শিক্ষা টিভি) কথা বললাম, সেটি নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করবো এবং আগামী দিনে কী পরিকল্পনা করা যায় সেটি দেখবো।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বাংলা ও ইংরেজি পড়তে, লিখতে ও শুনতে পারছে কিনা- ঠিকমতো সেই দক্ষতাগুলো যেন তারা অর্জন করতে পারে সে বিষয়ে জোর দিয়েছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা যেন কোনোভাবেই যৌন হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকদের কোচিং ও নোটবই বন্ধে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ যাতে দখল না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা নিয়মিত উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীত নিয়মিত পরিবেশন করতে বলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে।
সরকারের নির্দেশনা পালনে ডিসিরা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তারা মৌখিকভাবে কোনও সমস্যার কথা বলেননি। তবে কিছু লিখিত প্রস্তাবনা দিয়েছেন, আমরা সেগুলো বিবেচনা করবো।
উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা কমিটির মতো জেলা পর্যায়েও সেরকম কমিটি করা এবং মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়গুলো যেন উত্থাপিত হয় এবং মনিটরিংয়ের কাজগুলো যেন ভালোমতো হয়, এই বিষয়গুলো ডিসিদের বলা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
ডিসিদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কোটার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নিয়ম আছে যখন সরকারি কর্মকর্তারা বদলি হয়ে যান তখন সন্তানেরা সেখানকার সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। কোটা রাখলে ভর্তি না হলে আসন নষ্ট হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরের কর্মকর্তাদের সন্তানদের ভর্তির জন্য কোটা আছে, সেটা আসলে ব্যবহৃত হয় না।
সেটা কী উঠিয়ে দেবেন- প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিচার-বিবেচনা করে দেখতে পারি এটার আদৌ প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা?
ডিসিদের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রশ্নে ডা. দীপু মনি বলেন, এটি একটি প্রক্রিয়ার বিষয়। প্রস্তাব আসলে সেই ব্যাপারে কী করা যায়, সেটা আমরা ভেবে দেখবো।
কালের আলো/এআর/এমএম