বঙ্গবন্ধুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বপ্ন পূরণ করেছেন শেখ হাসিনা
প্রকাশিতঃ 11:29 am | July 20, 2019
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচা করে পূজামন্ডপ তৈরি হয়েছিল নারায়ণগঞ্জের আমলাপাড়ায়। এ পূজা মন্ডপের মাত্র এক ফুট পাশেই ছিল মসজিদ। মসজিদ ও পূজামন্ডপের এমন চিত্র দেখে রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
আরও পড়ুন: দুদকের ডিডি মলয়ের স্ত্রী প্রিয়া, বহিস্কৃত হয়েছিলেন সংগঠন থেকেও
প্রায় ৯ মাস আগে এ পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে তিনি বলেছিলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে চায়। এদেশের মানুষ ধর্মীয় বিভেদ চায় না। সকলে সমাজে শান্তিতে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে চায়।’
জাতির আরাধ্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্নের যথার্থতা অনুভব করে পুলিশ প্রধান সেদিন বলেছিলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই ধর্মীয় উৎসব পালন করবে এ স্বপ্ন দেখতেন জাতির জনক। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।’
বাংলাদেশের সুমহান ঐতিহ্যই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। লাল সবুজের এ দেশে অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীলতার আদর্শ মূর্তমান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তানসহ বহু দেশে সংখ্যালঘুরা যেভাবে নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হয় সেই হিসেবে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিশ্বে অনন্য এক নজিরও বটে।
আরও পড়ুন: দেশ বিরোধী ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে প্রিয়া সাহা, পেছনে কারা নাড়ছেন কলকাঠি?
কিন্তু বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন, দাবি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের নারী প্রিয়া সাহা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে গোয়েবলসীয় কায়দায় ভয়াবহ মিথ্যাচার করেছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ। নেটিজেনরা তাঁর সমালোচনায় মুখর হয়ে দাবি করেছেন কঠোর শাস্তির।
ষোল কোটির বাংলাদেশে বাস্তবতা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য অবিরাম সংগ্রাম করে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি এমপি বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মাথায় জনগণকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান উপহার দেন। ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল এই সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি।
মন্ত্রী বলেন, তিনি সব ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। ধর্মের কারণে কোনও নাগরিক যাতে বৈষম্যের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করেন। সবাই যাতে নিজ-নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জাতির পিতা ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নামে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করেন।’
ডাকসাইটে এ আওয়ামী লীগ নেতা মনে করেন, বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিস্টান সবাই নিজেদের ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে গেছে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে। তিনি বলেন, আমাদের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পদক্ষেপে বাংলার হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে বীর বিক্রমে লড়াই করেছে। ধর্মের ভিন্নতা ঐক্যের বাধা নয় বরং একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের অনিবার্য উপাদান হয়ে উঠেছে।’
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, এমনটিই বিশ্বাস করেন জাতীয় সংসদের অভিভাবক স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপিও। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন, সকল ধর্মই মানবতার কথা বলে। সম্প্রীতির কথা বলে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ- যেখানে প্রত্যেকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ বন্ধন অটুট রয়েছে। এ বন্ধন অটুট রেখেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক কালের আলোকে বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা নামের বাংলাদেশী নারীর ডাহা মিথ্যাচার দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার হীন চক্রান্ত। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে এনেছেন। পূরণ করেছেন জাতির জনকের লালিত স্বপ্ন। সব ধর্মের মানুষের শান্তি ও সৌহার্দ্যরে বন্ধনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে সম্প্রীতির রোল মডেল।’
কালের আলো/এসএইচ/এমএএএম