প্রতিশ্রুতি রক্ষা মেয়র আতিকের, উদ্বোধনের অপেক্ষায় সেই ‘আবরার ওভারব্রিজ’

প্রকাশিতঃ 9:48 pm | August 05, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

একটি ফুট ওভারব্রিজ ছিল না রাজধানীর বাড্ডা প্রগতি সরণির সড়কে। এ সড়কেই প্রায় ৫ মাস আগে বেপরোয়া সুপ্রভাত বাসের চাপায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী (২০)। সড়ক সন্ত্রাসে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রাণ ঝরে যাওয়ার পর ৮ দফা দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

ওই সময়েই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মোতাবেক একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। যেই কথা সেই কাজ। ঘটনার একদিন পর এ ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। আবরারকে যেখানে বাসটি চাপা দেয় ঠিক তার কয়েক গজ দূরে রাস্তার পাশে এর পরের দিনই নির্মাণ কাজ শুরু করে ডিএনসিসি। অত:পর পুরোদমে চলে নির্মাণযজ্ঞ।

ইতোমধ্যেই ৬০ ফিট দীর্ঘ ও ১০ ফিট প্রস্থ ‘আবরার আহমেদ ফুটওভারব্রিজ’র প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলন্ত সিঁড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হলেই সপ্তাহখানেকের মধ্যেই উদ্বোধন করা হবে বহুল প্রতিক্ষীত এ ফুটওভার ব্রিজ। ঈদের আগেই নিরাপদে কুড়িল সড়ক পারাপারের জন্য এ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে পারবেন পথচারীরা।

আলোচিত এ ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মধ্যে দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের প্রতিশ্রুতিও রক্ষা হবে। স্থাপিত হবে নগর পিতাদের ‘কথা দিয়ে কথা রাখার’ দৃষ্টান্তও।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে পিইবি স্টিল এলায়েন্স লিমিটেড। তাঁরা বলছে, সাধারণত কোন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে পাইলিংয়ের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাড্ডা প্রগতি সরণির সড়কের মাটি খুব নরম হওয়ায় পাইলিং করতে হয়েছে। এজন্য সময় লেগেছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. আরিফুর রহমান কালের আলোকে বলেন, ফাউন্ডেশন, পাটাতন ও কলামের কাজ শেষের মাধ্যমে ফুটওভার ব্রিজটি দাঁড়িয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই ব্রিজের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সিঁড়ির কাজ চলছে পুরোদমে। এ কাজ শেষ হতে আরো সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আমরা আশা করছি ঈদের আগেই ব্রিজটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে।’

দেখা গেছে, এ ফুটওভার ব্রিজকে ঘিরে এখনো সাধারণ মানুষের জল্পনার-কল্পনার শেষ নেই। এখনো ব্রিজটিকে ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড় আছেই। মূলত নিরাপদে কুড়িল সড়ক পারাপারের জন্য এ ব্রিজটি ব্যবহার করতে উন্মুখ হয়ে আছেন পথচারী ও স্থানীয়রা।

আর আবরারের জীবনের বিনিময়ে এ ব্রিজ পাওয়ায় তাঁর প্রতি শোকার্ত হৃদয়ের ভালোবাসার অর্ঘ্যও নিবেদন করছেন স্থানীয়রা। প্রয়াত মেধাবী আবরারের নামে ব্রিজটি নামকরণ শেষে তাঁর বাবাকে দিয়ে ব্রিজটি উদ্বোধন করা হলে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজেও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এ ঘোষণাই দিয়েছিলেন। এখন আন্দোলনকারী সাধারণ সেইসব শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৯ মার্চ সকালে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় সুপ্রভাত বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী নিহত হন। পরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করে চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

কালের আলো/এমএইচ/এমএএএমকে