সেনাপ্রধানের নির্দেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকায় সেনাবাহিনী

প্রকাশিতঃ 10:52 pm | August 07, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড নিয়ে এবার গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস। প্রতিনিয়তই বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা। ভয়াল আতঙ্ক নিয়েই ডেঙ্গু যেন গ্রাস করছে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাদেরও। ঘর থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, চা স্টল বা যানবাহন আলোচনা কেবলই ডেঙ্গু নিয়ে।

ডেঙ্গু মহামারী আকার নেওয়ার আগেই ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। দেশের এক নম্বর এ সমস্যা মোকাবেলায় হাত গুটিয়ে বসে না থেকে প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ নিজেই মাঠে নামেন।

ডেঙ্গু নিয়ে তিনি আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শুধু স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমেই ডেঙ্গু রোগের মোকাবেলা সম্ভব বলে মত দেন। মূলত সেনাপ্রধানের কঠোর নির্দেশনা প্রেক্ষিতেই আদাজল খেয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন সেনাবাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে কর্মকর্তারা।

গত কয়েকদিনে এ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের গতি আরও বাড়ানো হয়েছে। তাদের এ পরিচ্ছন্নতা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন নিজেদের পরিবারের সদস্যরাও।

বুধবার (০৭ আগস্ট) দিনমান দেশের প্রতিটি সেনানিবাসের প্রতিটি সড়ক, কার্যালয়, সৈনিক বাসস্থান এবং পারিবারিক বাসস্থানসমূহ ও এর আশেপাশের স্থানসমূহে পুরোমাত্রায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হয়।

ঈদের আগেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেও পূর্ণোদ্যমে কর্মতৎপরতা চালানো হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিজ নিজ আঙ্গিনা পরিষ্কার করতেও বলা হয়েছে।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে ঢাকা সেনানিবাসসহ অন্যান্য সকল সেনানিবাসে বুধবার (০৭ আগস্ট) পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ পরিছন্নতা অভিযানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকল পদবীর সেনাসদস্যরা স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই ব্যাপক আকারে এ পরিবেশ পরিচ্ছন্নতার আয়োজন করা হয়। এ সময় সেনানিবাসের প্রতিটি সড়ক, কার্যালয়, সৈনিক বাসস্থান এবং পারিবারিক বাসস্থানসমূহ ও এর আশেপাশের স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।

একই সূত্র বলছে, এ পরিছন্নতা অভিযানে সেনা সদস্যদের পাশাপাশি তাদের পরিবারও অংশগ্রহণ করেন । এছাড়াও দেশের সব সেনানিবাসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাও এ পরিছন্নতা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন। সেনানিবাসসমুহে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের জন্য সকলের মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অধিকতর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ পরিছন্নতা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় নানাবিধ চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এদিন এই পরিছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং নিয়মিত বিরতিতে এই ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

এর আগে গত ২৫ জুলাই সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সেনানিবাসের অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় ডেঙ্গু নির্মূল অভিযানের উদ্বোধন করেন। এ তাঁর জীবনসঙ্গী বেগম দিলশাদ নাহার আজিজসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

বেলুন উড়িয়ে সেই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছিলেন, ডেঙ্গু যাতে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে না পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক ও বেসামরিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাস ও এর আশপাশের এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগের কোন ভ্যাকসিন নেই। কাজেই এর প্রতিরোধে আমাদের অনেক সচেতন হতে হবে। আর ডেঙ্গু প্রতিরোধের মূলমন্ত্রই হলো ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং এডিস মশা নিধন বা নির্মূল করা। তিনি বলেন, সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি অফিস-আদালত ও বাসস্থানসমূহের আঙিনা ও ছাদে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে।

কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে