ঈদের দিনেও কর্মব্যস্ত নগরপিতা আতিকুল ইসলাম, ছুটলেন হাসপাতালে

প্রকাশিতঃ 4:17 pm | August 12, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার দিনটিতে তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালে। হাসপাতালের বিছানায় কারো জীবনে আকস্মিক নেমে আসতে পারে ঘোর অন্ধকার। স্বজনরা উদ্বিগ্ন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু একজন নগরপিতা তাদের ভরসা জোগাতে হাজির হলেন অন্যরকম এক চেহারায়।

শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি শিশুদের চকলেট, চুইংগাম, জুস এবং খেলনা উপহার দিয়ে তাদের মনে হাসি ফিরিয়ে আনলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

সোমবার (১২ আগস্ট) ঈদুল আজহার দিন দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসব ঘটনা প্রবাহের অবতারণা হয়। মেয়র এসময় চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীদের খোঁজখবর নেন।

এসময় মেয়র আতিক বলেন, ইতোমধ্যে আমরা সবাই এক সঙ্গে কাজ করে ডেঙ্গু নির্মূল শুরু করেছি। ঈদের ছুটিতেও ডাক্তার এবং হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকলে যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, আমাদের ৩৬৫ দিনই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। ডেঙ্গুকে কীভাবে রোধ করা যায়, তা ভাবতে হবে। সনাতন পদ্ধতিতে ডেঙ্গুমুক্ত করা যাবে না। নতুন পদ্ধতি বের করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের এডিস মশা নিধন কর্মীদেরও নতুনভাবে প্রশিক্ষিত করতে হবে।

সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করছে কি-না গণমাধ্যমে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ডেঙ্গু নির্মূলে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ডেঙ্গু রোগে যারা মারা গেছেন, তাদের আত্মার শান্তি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আজকে ডেঙ্গু রোগে এখানে যারা চিকিৎসাধীন আছেন, তারা এই রোগ না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ করতেন। কিন্তু আজকে তারা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তাই আমাদের সবার উচিত তাদের পাশে থাকা। দোয়া করি সবাই যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে আপনজনের কাছে ফিরে যান।

কাজ করার মানসিকতা রয়েছে মেয়র আতিকুল ইসলামের। কাজ করতে পারবেন বিধায় উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উত্তরসূরী হিসেবে তাকেই বেছে নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ৮ মাসে বঙ্গবন্ধু কন্যার সেই আস্থা ধরে রেখেই নিজেকে অ্যাকশনে রেখেছেন কর্মবীর এ মানুষটি।

এদিন দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন তিনি। ঘোষনা দিয়েছেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোরবানীর পশুর বর্জ্য অপসারণের।

মেয়র আতিকুল ইসলামের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ দুটি। একটি পশুর হাটের বর্জ্য অপসারণ করা এবং অন্যটি কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা।

মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, আমি এতদিন কোনো সময় বলিনি। তবে আমরা আশা করছি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত শহরে কোরবানি হওয়া পশুর অপসারণ করে ফেলব। শুধু ২৪ ঘণ্টা না, আমরা দেখছি কিভাবে এটিকে ২৪ ঘণ্টার শেষ করা যায়।

অনেক ওয়ার্ডে বিকেলের মধ্যেই বর্জ্য অপসারণ করা হয়ে যাবে দাবি করে আতিক বলেন, কিছু ওয়ার্ড থেকে আমরা এরই মধ্যে খবর পাচ্ছি যে, বর্জ্য অপসারণ প্রায় শেষ। বিকেলের মধ্যেই বেশিরভাগ ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণ করা হয়ে যাবে। আমাদের ৩৬৭টি ট্রাক প্রায় এক হাজার ৬০০ টন বর্জ্য নিয়ে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল এ পৌঁছেছে।

হাটের বর্জ্য নিয়েও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, যতক্ষণ না হাটের বর্জ্যসহ সব বর্জ্য অপসারণ করা যাচ্ছে ততক্ষণ আমরা সবাই মাঠে থাকবো। হাটের বর্জ্য থেকে যেন মশার উপদ্রব না ছড়ায় তার জন্য বিশেষভাবে ফগিং এবং লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানোর নির্দেশনা দিয়েছি আমি। আর যেসমস্ত ইজাদার হাটের বাঁশ না সরিয়ে রেখে যান তাদের আগামী বছর থেকে ফাইন (জরিমানা) করা হবে। তাদের জামানতের টাকা থেকে এসব পরিস্কার করা হবে।

বর্জ্য অপসারণে নগরবাসীর সহায়তা চেয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে আগামী বছর সিটি করপোরেশন নির্ধারিত স্থানে নাগরিকেরা আরও বেশি পশু কোরবানির জন্য নিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এসময় মেয়রের সঙ্গে ডিএনসিসির প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, সচিব রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মনজুর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ