শোক-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জাতির পিতাকে স্মরণ

প্রকাশিতঃ 3:29 pm | August 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর গভীর শোকাবহ পরিবেশে স্মরণ করছে বাঙালীরা।

১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতাকে সপরিবারে ঘাতকচক্র হত্যা করে।

দিবসের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষ সমবেত হয় রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তারা জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টায় প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তারা ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন এবং দোয়া ও মোনাজত করেন।

এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতা এবং মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর পর সর্বস্তরের মানুষের জন্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বর চত্বর উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

বিদেশি ষড়যন্ত্রকারি ঘাতকচক্র সপরিবারে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস দেশব্যাপী সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যলয়সহ সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো কতাকা উত্তোলন করা হয়।

দিবস উপলক্ষে আগের দিন বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাজতে থাকে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে পাড়া-মহল্লায় দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য বিরতণ করা হচ্ছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকেই বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে মানুষ আসেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। সকাল ৭টার মধ্যে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। রাসেল স্কয়ার থেকে কালাবাগান, সোবহানবাগ, স্কয়ার হাসপাতাল পুরো এলাকায় লাখো জনতার ঢল নামে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান বনানী কবরস্থানে। সেখানে তিনি ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার তার পরিবারের সদস্যদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারাও বনানীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

পরে সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং সূরা ফাতেহা পাঠ করেন। সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

এর পর দলের সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও আবুল মাল আবদুল মুহিত, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এনামুল হক শামীম, তথ্যমন্ত্রী এবং দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন দল, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

কালের আলো/এআর/বিও