বাবা’র মতোই তৃণমূলে ‘সেতুবন্ধন’ রচনায় সাইফুজ্জামান শিখর
প্রকাশিতঃ 11:06 am | April 08, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রয়াত বাবা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান ছিলেন বঙ্গবন্ধু’র ঘনিষ্ঠ সহচর। নিজের মেধা, দক্ষতা, প্রজ্ঞা ও সততার গুণে চারবার মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছিলেন সংসদের বিরোধী দলীয় পার্লামেন্টারি বোর্ডের সচিব, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিমূর্ত, রক্তঝরা ও অবিস্মরণীয় মহান একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক।
বাবা’র চোখেই শৈশবে নিজের পৃথিবী আলোকিত করেছিলেন সন্তান। চৌকস পার্লামেন্টারিয়ান বাবা হয়তোবা তখন ধরে নিয়েছিলেন তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সন্তানও একদিন সাফল্যের সোনালী শিখরে আরোহণ করবে। এ কারণেই হয়তো তাঁর নাম রেখেছিলেন ‘শিখর’। বলছি, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখরের কথা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বিশ্বস্ত স্বজন’ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক এ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখরের কাছে স্বভাবতই বাবাই ‘সুপার হিরো’।
ফেলে আসা শৈশবে বাবা’র আদর্শ বুকে ধারণ করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে কত লড়াই-সংগ্রামের পথ মাড়িয়েছেন। বাবা’র মুখেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের মহিমা, ক্যারিশমা, ব্যক্তিতত্বের দ্যুতি আর সুপুরুষোচিত দেহসৌষ্ঠবের গল্প শুনে আদর্শ নির্ভর, মেধাবী ও তারুণ্যের ছাত্রলীগের পতাকা উড়িয়েছেন। দলের দু:সময়ে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অমিত সাহস নিয়ে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। হয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা’র বিশ্বস্ত সহচর।
প্রয়াত বাবা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের হীরকখচিত উজ্জ্বল, বর্ণময় নন্দিত ইতিহাস বুকে নিয়েই দীর্ঘদিন যাবত শেকড়ের টানে ফিরেছেন সাইফুজ্জামান শিখর। প্রাডো জিপে করে বিলাসী জীবনের মুগ্ধতা না ছড়িয়ে মোটর বাইক চেপে মানবতার ডাকে মাইলের পর মাইল পথ চলছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। পরম মমতায় তাদের বুকের উত্তাপে আগলে রাখছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা কাটাচ্ছেন দুর্গম এলাকায়। তাদের সহায়তা করছেন। সাহস জুগাচ্ছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নও দেখাচ্ছেন। শিখরের চেহারায় দুর্গত, ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষজন যেন দেখতে পাচ্ছেন তাদের প্রিয় নেতা আসাদুজ্জামানের চেহারা।
মাগুরাবাসী এখনো গর্ব করে প্রয়াত শক্তিমান রাজনীতিক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানকে নিয়ে। কিংবদন্তিতুল্য এ রাজনীতিক ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এপিএ) ও ১৯৭২-এ গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯০ সালের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে শেষবারের মতো মাগুরা-২ (শালিখা-মহম্মদপুর) আসন থেকে তিনি জয়ী হন। ওই বছর আওয়ামী লীগের অনেক জাতীয় নেতা তাদের নিজ নিজ আসন থেকে পরাজিত হলেও আসাদুজ্জামান ঠিকই ৬১ হাজার ৬৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। একই সঙ্গে ৮৬ ও ৯১ সালের নির্বাচনে তিনি রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
বাবা’র মতো কেন্দ্র থেকে প্রান্ত নিভৃতে ছুটে বেড়াচ্ছেন ছেলে সাইফুজ্জামান শিখর। মাগুরায় দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রয়েছে তাঁর ‘ওয়ান টু ওয়ান’ যোগাযোগ। মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ মাগুরা-১ (সদর) আসনে তাঁর দলীয় মনোনয়নের জোর দাবি ওঠেছে তৃণমূল থেকেই। শিখরের বড় বোন কামরুন লায়লা জলি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য।
প্রয়াত ডাকসাইটে রাজনীতিক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের উত্তরাধিকার হিসেবেই দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের কাছেও বাড়তি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সাইফুজ্জামান শিখরের। এছাড়া মাগুরায় বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ডই পরিচালিত হচ্ছে তাঁর হাত ধরে।
স্থানীয় জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছেও ‘প্রাণভোমরা’ হয়ে উঠেছেন শিখর। তাঁর মনোনয়নের দাবিতে সবাই একাট্টা।
সাইফুজ্জামান শিখরের বাবা আসাদুজ্জামানের হাত ধরেই রাজনীতিতে অভিসিক্ত হন মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি তানজেল হোসেন খান। বরাবরই তিনি বলেন, প্রয়াত কিংবদন্তি রাজনীতিক আসাদুজ্জামান ছিলেন আমার রাজনীতির দীক্ষাগুরু।
মাগুরা-১ আসন থেকে এ আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিখরকেই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করে বলেন, ‘বাবা’র মতোই শিখরের মাঝেও আত্নত্যাগ ও কর্মীবান্ধব মানসিকতা রয়েছে। এ আসনটি ধরে রাখতে ভোটযুদ্ধে তাঁর কোন বিকল্প নেই।’
একই রকম মত পোষণ করে মাগুরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান সালাউদ্দিন জানান, দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাইফুজ্জামান শিখর একটি নিবিড় সেতুবন্ধন রচনা করতে সক্ষম হয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে তিনি আসনটি উপহার দিতে সক্ষম হবেন।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাঁর একান্ত সহকারী সচিব সাইফুজ্জামান শিখরের নেতৃত্বে এলাকায় ব্যাপক অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন হয়েছে, এমনটি জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, একজন জনপ্রতিনিধি যে কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন সেখানেই সফলতার পরিচয় দিয়েছেন সাইফুজ্জামান শিখর।
গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নযজ্ঞের উদাহরণ তুলে ধরে তারা বলেন, মাগুরার অত্যাধুনিক স্টেডিয়াম, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, বন্ধ হয়ে যাওয়া টেক্সটাইল মিল চালু, মাগুরার রেললাইন, নবগঙ্গা ব্রিজ, মহম্মদপুরের মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুসহ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
কালের আলো/আরএস/এএ