আবারো ময়মনসিংহে নগর বাউল ‘যতদিন তোমরা আছো ততদিন আমি আছি’

প্রকাশিতঃ 6:50 pm | April 24, 2018

শোবিজ এডিটর, কালের আলো:

মাত্র চার দিন আগে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে একই মঞ্চে, একই মাঠে লাখো দর্শক মাতিয়ে গেছেন নগর বাউল। সেই আনন্দ-উদ্দীপনার রেশ কাটতে না কাটতেই রক সঙ্গীতের এ ‘গুরু’ আবারো কন্ঠের মাধুর্যতা আর সুরের উত্তাপে মোহময় এক রাত উপহার দিলেন ময়মনসিংহবাসীকে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এ কন্ঠশিল্পী নিজের গানের কথা ও সুরে কেবলই যে জীবনের গল্পই বলে গেলেন বিষয়টি তেমন নয় মোটেও।

হাহাকার, আর্তনাদ, দ্রোহ-প্রতিবাদ সবই উপহার দিয়ে নিজের একেকটি গান গেয়ে হাজার হাজার শ্রোতার মনেও দাগ কেটেছেন। প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় শ্রোতা-ভক্তদের প্রাণের মায়ার বাঁধনে জড়ানো নগরের এ বাউল উচ্চারণ করলেন ‘যতদিন তোমরা আছো (শ্রোতা-ভক্ত) ততদিন আমি আছি।’ সোমবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮ থেকে ১০ টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টায় শ্রোতাপ্রিয় ১১ টি গানের আবেশে আবেগ ও ভালোবাসা ছড়িয়ে বিদায় জানালেন ময়মনসিংহ। বলে গেলেন, ‘বেঁচে থাকলে আবারো দেখা হবে, যদি থাকি এক পথে।’

মোবাইল কোম্পানি বাংলালিংকের নতুন দিনের কনসার্টে নগর বাউল ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনসার্টের মতো এদিনও শুরুতেই ‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী হয়ে খবর নিও না’ গান দিয়ে বিরহ এক আবহ তৈরি করেন।

বাবরি চুলের এ কন্ঠের জাদুকরের সঙ্গে একই ছন্দে মাথা দুলিয়েছে সংস্কৃতির নগরী রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামের হাজারো দর্শক।

হাজারো দর্শকের হৃদয় স্পর্শ করতেই মন প্রান উজাড় করে গেয়েছেন ‘হই হই কান্ড রই রই ব্যাপার, বাংলার লাঠিয়াল, সুন্দরী তমা আমার, গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া, দুষ্টু ছেলের দল, ইয়া রব ইয়া রব, মীরাবাঈ, আসবার কালে আসলাম একা, সুলতানা বিবিয়ানা, পাগলা হাওয়া।’

চার দিনের আগের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কনসার্টে নগর বাউলের আমেজে এ স্টেডিয়ামের মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড দেয়া বাঁশ ভেঙেছিল উন্মাতাল তারুণ্য। ওইবার তাঁরা মঞ্চের কাছাকাছি চলে আসলেও এদিনটায় সেদিকে কড়া নজরদারি ছিল পুলিশের।

আর এ কারণেই জেমসের গানের মাঝামাঝি সময়ে এবার কয়েক দফা পুলিশের সঙ্গে মৃদু ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে বাঁধভাঙা তারুণ্যের। মঞ্চে থেকে স্বভাবতই বিষয়টি দৃষ্টি এড়ায়নি জেমসেরও। আর এ কারণেই হয়তো গানের ফাঁকেই জানতে চেয়েছেন ‘পেছনের দিকটা কী ঠিক আছে?’

তরুণ-যুবারা নগর বাউলের কন্ঠে একই সুরে ‘ঠিক আছে’ জবাব দিলেও বার বার পুলিশের শরীরে বোতলে ভরা পানি ছুঁড়ে মেরে দৌড়ে পালিয়েছে পাগলাটে তারুণ্য। তবে পুলিশও ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সঙ্গে বড় রকমের অ্যাকশন ছাড়াই পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে।

নগর বাউলের আগে একই মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আরেক জনপ্রিয় ব্যান্ড লালন। এ ব্যান্ডের প্রধান ভোকালিস্ট গেয়েছেন ‘নদী পাহাড় সাগরে, সময় গেলে সাধন হবে না, ক্ষ্যাপারে, মনের মানুষ আছে লুকিয়ে, পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না’ গান।

মঞ্চ ছাড়ার আগে লালন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট বলেন, ‘আমরা গান করি, তোমরা (শ্রোতা) শুনো বলে। চট্টগ্রাম, রংপুর ও ময়মনসিংহের মানুষ গান পাগল। একটি ইভেন্ট সফল করতে মূলত দরকার গান পাগল শ্রোতা। এক্ষেত্রে ময়মনসিংহকে স্যালুট করা যায়।’

নগর বাউল ও লালন ছাড়াও শিরোনামহীন, শুভ রকস, ভাইকিংস ও শূণ্য তাদের জনপ্রিয় সব গান পরিবেশন করেন।

 

কালের আলো/এসআর/এএ