কোমলমতিদের সঙ্গে বিমান বাহিনী প্রধানের অন্যরকম একদিন, উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিতঃ 8:06 pm | January 01, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
কলেজের আঙিনায় নতুন পাঠ্য বইয়ের ঘ্রাণ। আহ কী সুন্দর! বছরের প্রথম দিন সব শিশুর হাতে নতুন বই। শিক্ষার্থী থেকে অভিভাবক সবার চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ যেন এক নীরব শিক্ষা বিপ্লব। নতুন বইয়ের গন্ধে উচ্ছ্বসিত প্রধান অতিথি থেকে শুরু করে বিশেষ অতিথিরাও।
মাতোয়ারা মনে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়েছেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। বই উৎসবে শামিল হয়ে ঝকঝকে চার রঙা নতুন বই নিয়ে তিনি তুলে দিয়েছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে। বিমান বাহিনী প্রধানের হাত থেকে বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা পরম আনন্দে বই বুকে জড়িয়ে পথ ধরেছে বাড়ির।
বুধবার (০১ জানুয়ারি) সকালে বগুড়ার বিএএফ শাহীন কলেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন দৃশ্যপ্রবাহের অবতারণা হয়। স্থানীয় বারপুরে অবস্থিত কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত বই উৎসবে শিশুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করা, ছবি তোলার পাশাপাশি তাদের হৃদয়-মস্তিষ্কে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার প্রেরণার বার্তা গেঁথে দেন।
সুশৃঙ্খলভাবে নতুন বই হাতে নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে হাসিমুখে বাড়ির পথ ধরে শিক্ষার্থীরা। এর আগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কলেজের নবনির্মিত ভবনের ফলক উন্মোচন ও একাডেমিক কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠান শেষে দেখা যায়, একসেট বই হাতে নিয়েই সঙ্গে আসা বাবা-মায়ের দিকে ভোঁ দৌড় দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে পরম যত্নে নতুন বই বুকে চেপে রাখতে। কেউ কেউ নতুন বই হাতে নিয়ে ছবি তুলেছে। যেন আনন্দের ভেলায় ভাসছে এসব শিক্ষার্থীরা।
বগুড়ার বিএএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা কালের আলোকে বলেন, ‘নতুন বই পেয়েছি, খুব ভালো লাগছে। নতুন বই পাওয়ার মজাই আলাদা। মনে হচ্ছে আজই বাড়িতে গিয়ে সব বই পড়ে ফেলি।’
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত নিজের বক্তব্যে নবনির্মিত এই প্রতিষ্ঠানের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে দেশের সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার পরামর্শ প্রদান করেন।
এছাড়াও তিনি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও নিবেদিতপ্রাণ হয়ে এই শিক্ষাঙ্গনকে একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ হিসেবে রূপান্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীকে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানেরও আহ্বান জানান।
উৎসবমুখর পরিবেশে এ অনুষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিমান বাহিনী প্রধান কলেজে এসে পৌঁছালে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, প্রকল্প পরিচালক ও কলেজ অধ্যক্ষ তাঁকে স্বাগত জানান।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বগুড়ার বিএএফ শাহীন কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। কলেজটিতে আধুনিক সুবিধাদিসহ শিশু শ্রেণি হতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ১ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থী মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে।
নবনির্মিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণ, দারিদ্র-বিমোচন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা দেশের টেকসই উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদী উচ্চারণ করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থেকে শুরু করে বিশেষ অতিথিরাও।
কালের আলো/এসআর/এএ