পুলিশকে কতটা ভালবাসেন প্রধানমন্ত্রী?
প্রকাশিতঃ 10:23 am | January 07, 2020
এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর, কালের আলো :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীর জন্য অর্থ খরচ করাকে ব্যয় মনে করেন না কখনও। নিজেই উচ্চারণ করেন-‘পুলিশের কোন দাবি করতে হয় না’। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলা পুলিশ বাহিনীর মনের কথা তিনি বোঝেন। নিজেই উদ্যোগী হয়ে পুলিশের সমস্যা সনাক্ত; চাওয়া-পাওয়া পূরণ করেন। ‘পুলিশবান্ধব’ একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও গোটা বাহিনীতেই তিনি জনপ্রিয়।
আরও পড়ুন: পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ ‘ইতিহাসের পাতায়’, তৃতীয় বারের মতো স্বীকৃতি প্রধানমন্ত্রীর
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার জন্য পুলিশের নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকার প্রশংসা করেন অকপটে। অনীহা দূর করে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই কথাটিও উচ্চারণ করেন সানন্দে। কখনও বলা হয়নি কিন্তু যৌক্তিক বিষয় এমন দাবি নিজেই শিখিয়ে দিয়েছেন জননিরাপত্তার অগ্রদূত বাহিনীর কর্মকর্তাদের।
পুলিশের জন্য আলাদা মেডিকেল কোর-এই দাবি কেউ না তুললেও নিজের অভিজ্ঞতার আলোকেই বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। পুলিশের কর্মযজ্ঞে সন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী মুজিব বর্ষে বাহিনীটির নির্ধারিত প্রতিপাদ্যে মুগ্ধতার কথাও প্রকাশ করেছেন।
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ এই প্রতিপাদ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে পুলিশকে জনতারই হতে বলেছেন। মানুষ কোন অন্যায় দেখলে পুলিশকে ফোন দিচ্ছে, পুলিশ পৌঁছে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে এমন দায়িত্ববোধেরও নজির স্থাপনের বিষয়টিও দৃঢ়কন্ঠে তুলে এনেছেন। গর্ব করেন পুলিশের নারী সদস্যদের নিয়েও।
আরও পড়ুন: আইজিপির জবানীতে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পুলিশ’, প্রধানমন্ত্রীর বাস্তবধর্মী পদক্ষেপে বেড়েছে সক্ষমতা!
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্যরা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের পুলিশের সঙ্গে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সেই উদাহরণ টানেন। জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেলের নারী সদস্যদের আরও বেশি করে সেখানে নেওয়ার আগ্রহের কথাও জানান।
মাস পাঁচেক আগে দশ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। এই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত অনুসরণে অন্যদেরও তাগিদ দিয়েছেন। ৮০’র দশকে যখন গোপালগঞ্জে ডাকাতি হতো তখন স্থানীয় পুলিশকে সহায়তার জন্য নিজের স্পিডবোট দিয়ে দিতেন। তেল খরচের টাকাও নিজেই সরবরাহ করতেন।
বাবা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতি নিজের অকৃত্রিম ভালোবাসার এমন নানা উদাহরণও তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূলত পিতা মুজিবের কাছ থেকেই এমন গুণাবলী পেয়েছেন তিনি। পুলিশ পরিবারেরও চরম আপন যেন তিনি!
পাক হানাদারদের শাসন আর শোষণের বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেতে একটি স্বাধীন মাতৃভূমির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মহামানব বঙ্গবন্ধু। নীল আকাশে লাল-সবুজের স্বাধীন পতাকা উড়বে, চোখে মুখে আর কল্পনার জগতজুড়ে ছিল এমন স্বপ্ন। জাতির পিতার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন স্বার্থক করতে মুক্তি সংগ্রামে প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পুলিশই। হয়তো এ কারণেও পুলিশ বাহিনীর প্রতি হৃদয়:নিসৃত এমন আবেগ ভালোবাসা প্রধানমন্ত্রীর।
বরাবরই প্রধানমন্ত্রীর প্রগাঢ় স্নেহের ছোঁয়াও পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশকে প্রধানমন্ত্রী কতটুকু ভালোবাসেন, তাদের প্রতি তার প্রশ্নাতীত আন্তরিকতার মাত্রাও যেন প্রকাশ পেয়েছে পুলিশ প্রধান ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর উক্তিতেই-‘বিগত এক দশকে প্রধানমন্ত্রীর ঔদার্য্য ও আন্তরিক ছোঁয়ায় বদলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
তার ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ পুলিশ আজ হয়ে উঠছে দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় অধিকতর দক্ষ ও যোগ্য।’ ‘প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতেই পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল যেমন এমনটি বলেন।
তেমনি জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনেরও গুরুত্বপূর্ণ উচ্চারণ-প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে অনেক কিছু দিয়েছেন। ২০০৯-১০ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন ক্ষমতায় আসেন তখন পুলিশের ডেভেলাপমেন্ট বাজেট ছিল ৮৫ কোটি টাকা। এখন সেটি ১ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা।’
প্রতিটি পুলিশ সপ্তাহেই প্রথম দু’টি দিনের বেশিরভাগ সময়ই পুলিশের সঙ্গে নিজের পারিবারিক আবহের মতোই কাটান প্রধানমন্ত্রী। ব্যতিক্রম হয়নি চলতি পুলিশ সপ্তাহেও। রোববার (০৫ জানুয়ারি) রাজারবাগে পুলিশের প্যারেড অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সোমবার (০৬ জানুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তাদের স্বজন হয়েই যেন কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
প্রধানমন্ত্রীর নতুন মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউসের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতিবিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী তার বাম পাশে বসা পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সঙ্গে হাসিমুখে, ফুরফুরে মেজাজেই বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের বক্তব্যে যেমন গভীর মনোযোগ দিয়েছেন তেমনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ, খুলনার পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির ও চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছেন।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতা এনে দিয়েছেন বাঙালির মুক্তি ও চিরকাঙ্খিত স্বাধীনতা। আপনি দিয়েছেন স্বনির্ভরতা, সমৃদ্ধি এবং স্বচ্ছলতা’ প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথির ভাষণের অনুরোধ করতে গিয়ে এভাবেই বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস।
সরকার প্রধানের মূল্যবান দিক নির্দেশনামূলক ভাষণের পর তিনি বলেন, ‘আপনার প্রগাঢ় আন্তরিকতায় আমরা সিক্ত; আমরা সমৃদ্ধ। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। যাতে করে আমরা দেশে ও দেশের বাইরে মাথা উঁচু করে নিজেদের প্রমাণ করতে পারি।’
পুলিশের প্রত্যাশা-প্রাপ্তি
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম পুলিশ বাহিনীর কাঠামো সংস্কারের দাবি তোলেন। বাহিনীতে নতুন করে ১৭টি অতিরিক্ত আইজিপির পদ সৃষ্টির দাবির পাশাপাশি ৭১টি ডিআইজি, ১৮৪টি অতিরিক্ত ডিআইজি এবং ১৩৩টি এসপিসহ মোট ৪০৫টি নতুন পদ সৃষ্টির দাবি জানান। অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের সঙ্গে পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তার সংখ্যা সমন্বয়ের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুলিশ কাঠামো অনেক সংস্কার করে দিয়েছি। যে কোন একটি প্রতিষ্ঠানে প্রমোশন হয় পিরামিড আকারে, এটা বাস্তবতা। আমরা জনবলের সাথে সাথে যারা দায়িত্ব বা লিডারশিপ দিবেন আনুপাতিক সেই পদগুলোও সৃষ্টি করতে হবে। এরই মধ্যে পুলিশে ২১৫ টি নতুন পদ সৃজন হয়েছে। পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২ লক্ষ ২২ হাজার ৭২১ জনে উন্নীত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে নতুন নতুন ইউনিট খোলা হচ্ছে। শিল্প পুলিশসহ বিশেষায়িত বিভিন্ন ইউনিট খোলা হয়েছে। সেসব ইউনিটে পদোন্নতি এবং পদায়নেরও সুযোগ রয়েছে।’
ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন-অর-রশিদ প্রবাসীদের আইনগত সহায়তার জন্য বিভিন্ন দূতাবাসে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যেমন : ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিআরটিএ, বিআইডব্লিউটিএসহ বিভিন্ন সংস্থায় পুলিশ সদস্যদের প্রেষণে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
এমন প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে ইতোমধ্যেই পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পুলিশের প্রতিনিধি থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। সেটা আমরা ব্যবস্থা নেবো। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোন গ্রেফতার করার এখতিয়ার নেই। মাঝখানে আমরা শুনেছিলাম..।
তাদের গ্রেফতারের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকেই বলতে হবে। এক্ষেত্রে তারা নির্দেশনা দিতে পারে। তারা ধরে এনে হাজতখানা বানাবে, হাজতে রাখবে এটা দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ না। যার যার কাজ তার তার করতে হবে, এ কথাটা মাথায় রাখতে হবে।’
তবে বিভিন্ন দূতাবাসে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দূতাবাসগুলোয় নিয়োগের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যারা আছেন তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে পুলিশ সদস্যদের খুব একটা কাজ নেই। বিদেশে কোনো কাজ করতে গেলে স্থানীয়রা দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরই প্রাধান্য দেন।’
খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার লুৎফুল কবীর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানদের আলাদা আবাসিক বাড়ির ব্যবস্থা করার দাবি তোলেন। অন্য ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মতো পুলিশ কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত গাড়ি ক্রয়ের ঋণ সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেন। গাড়ি ক্রয়ে ঋণ সুবিধার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
আবাসিক বাড়ির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে গুলশানে বিশাল প্লট দেওয়া হয়েছে। ১১৮/১১৯ কোটি টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট বানানো হচ্ছে পুলিশের উর্ধ্বতনদের জন্য। প্রতিটি ইউনিট প্রধানের জন্য ফ্ল্যাটগুলো ডেডিকেটেড থাকা ভাল। যে যেখানে পদায়ন হবে সে সেখানে থেকে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
ঢাকার বাইরে যারা থাকে তাদের জন্য আমরা ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি প্রতি উপজেলায় ফ্ল্যাট সিস্টেম করে দিতে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা যাবেন তাদের সেই ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। যাতে নিরাপদে তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবে, সেইভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে নারী পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশে মাত্র ১৫০০ নারী সদস্য রয়েছেন। এ সংখ্যা ৩ হাজার করার দাবি করেন। পাশাপাশি নারী পুলিশের জন্য আলাদা দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করার কথা বলেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার করারও প্রস্তাব করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, ‘‘নারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। নারী পুলিশ ভালো কাজ করছে; তাদের প্রশিক্ষণ আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ থাকা উচিত। তাদের জন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আবাসন ব্যবস্থাও করতে হবে।’
ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ডাম্পিং স্টেশন নয়
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের একটি দাবি এসেছে, ট্রেনিং ইন্সটিটিউটগুলোতে ভাতা বৃদ্ধি। ইতোমধ্যে সারদা ও পুলিশ স্টাফ কলেজে সেটি ৩০ শতাংশ হারে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য জায়গায় কিন্তু আমরা যেহেতু ৩০০ ভাগের ওপর বেতন বৃদ্ধি করেছিলাম এজন্য ভাতার পরিমাণ পার্সেন্টিজে রাখিনি।
কারণ ভাতা পূর্বের বেতনের যে সংখ্যা ছিল সেই সংখ্যায় রেখে দিয়েছিলাম। সেই অনুপাতে কিন্তু আপনারা ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। এরপরেও আমরা বলেছি, অন্ততপক্ষে ট্রেনিং ইন্সটিটিউটগুলোতে যেখানে ট্রেনিং দেওয়া হয় সেখানে যাদের পাঠানো হয় তারা মনে করে আমাদের বুঝি ডাম্পিং স্টেশনে ফেলে দিলো।
আসলে অত্যন্ত মেধাবীদের সেখানেই দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। বাকী জায়গাগুলোতেও ভাতা বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, আমি সরকারে আসার পর রাজারবাগে প্রথম ১০ তলা ভবনের হাসপাতাল করে দিয়েছি। বিভিন্ন বিভাগে ৫ টি হাসপাতাল করে দিয়েছি।
আলাদা মেডিকেল কোরের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশে কিন্তু মেধাবীরা আসে। ব্যারিষ্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ অনেক মেধাবীরা আসে। আমি মনে করি, পুলিশের জন্য একটি মেডিকেল কোর আলাদা করা প্রয়োজন। পুলিশ হাসপাতালে যখনই কোন ডাক্তার নিয়োগ দিতে চাই, সেখানে তারা আসতে চায় না।
পুলিশের মধ্যে কে ডাক্তার আছে তাকে খুঁজে সেখানে দায়িত্ব দিতে হয়। আপনারা যদি ডাক্তারদের জন্য আলাদা ইউনিট করে ফেলেন সেটা আপনাদের নিজস্ব চিকিৎসার জন্য সুবিধা হবে। একটি নিজস্ব ইউনিট করে দিতে পারলে ভাল হবে। এই প্রস্তাবের দাবি কিন্তু আপনারা করেননি আমি করেছি।’
এ কথা বলেই হেসে উঠেন প্রধানমন্ত্রী। হাসির রোল পরে যায় শাপলা হলের পুলিশ কর্মকর্তাদের মাঝেও।
প্রধানমন্ত্রীকে শুনতে হয় না পুলিশের দুর্নামের কথা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি দুই টার্মে ৮২ হাজারের ওপরে পুলিশ সদস্য বৃদ্ধি করেছেন। গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন। পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতির সংকট নিরসন করে দিয়েছেন সুপার নিউমারি পদের মাধ্যমে। পুলিশের জন্য অনেক করেছেন। ১১ বছর আগের পুলিশ আর সেই পুলিশ এক নয়। পুলিশ তাদের দক্ষতা ও বিচক্ষণতার মধ্যে দিয়ে কাজ করছে।
আপনাকে এখন আর হয়তো পুলিশের দুর্নামের কথা শুনতে হয় না। এখন পুলিশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেই কথাই হয়তো শুনেন। মাঝেমধ্যে দুই চারটি কথা অবশ্যই শুনেন। সেগুলো পুলিশের আইজিপি সরাসরি অ্যাকশন নেন বলেই এই বাহিনীতে শৃঙ্খলা অটুট রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
.
.
এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান
অ্যাকটিং এডিটর
কালের আলো.কম
.
কালের আলো/এমএএএমকে