প্রযুক্তির দাপটে স্কুল আঙ্গিনায় নেই মেধাবীদের ভীড়

প্রকাশিতঃ 6:59 pm | May 06, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

রোদ ঝলমলে দুপুর। ময়মনসিংহের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। কিন্তু ফলাফলের অপেক্ষায় এ স্কুলের আঙিনায় নেই মেধাবীদের ভিড়, নেই আনন্দ-উল্লাস।অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মোবাইল ফোন ও ব্যক্তিগত কম্পিউটারের (পিসি) মাধ্যমে ফলাফল জেনে নিচ্ছে।

রোববার (০৬ মে) নগরীর ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুল, ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, ফল টানানোর পরও নেই আনন্দ-উল্লাস। হাত উঁচিয়ে বিজয়ে ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে ক্যামেরাবন্দি হওয়ার দৃশ্যও অনুপস্থিত। প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জনের পরেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসেনি আনন্দ-উল্লাসের হাট।

বরাবরের মতো এবারও শতভাগ পাসে করেছে ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ স্কুলে ১৫৭ জন পরীক্ষার্থীর ১৪৭ জনই জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু ফল প্রকাশের পরপরই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেন কলেজ অধ্যক্ষ লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বর্তমানে মোবাইল ফোন ও ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পাড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় নেই মেধাবীদের। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আমাদের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনেক শিক্ষার্থীই ফলাফল জানতে স্কুলে এসেছে।

ফলাফলের দিনে শিক্ষার্থীদের কম উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার বলেন, এখন অনেকেই স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ফলাফল জেনে নিচ্ছে। স্কুলে আসের প্রয়োজন হয় না। ঘরে বসেই ফল জানা যায়। প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কিছুটা কমেছে উচ্ছ্বাস-আনন্দ।

কথা হয় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী সুবান্বিতা দে স্বস্তি, জান্নাতুল ফেরদৌস মুন ও উম্মে হুজাইফা অর্পার সঙ্গে। তারা বলেন, অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে ফলাফল জানতে এসেছে। ভালো ফলাফলের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠার আনন্দটাই আলাদা। ঘরে বসেতো এ আনন্দ মেলে না। তাই ফলাফল জানতে স্কুলে এসেছি।

কোনো শিক্ষার্থীর দেখা মেলেনি ময়মনসিংহ গালর্স ক্যাডেট কলেজে গিয়ে। কিন্তু এ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাদের ফলাফলে শিক্ষকরা খুশি হলেও, নেই আনন্দ- উল্লাস।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ হালিমা খাতুন বলেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই নগরীর বাইরের থাকে। ওরা নিজ নিজ জেলা থেকে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করেছে। স্কুলে না এলেও ওদের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। ভালো মানুষ হয়ে ওরা যেন জীবন গড়তে পারে সেই প্রত্যাশাই করি।’

কালের আলো/একে/ওএইচ