ময়মনসিংহে জেএসসিতে শহরের স্কুলগুলোর সাফল্য অক্ষুন্ন, পিছিয়ে গ্রামের স্কুল
প্রকাশিতঃ 8:03 pm | December 30, 2017
বিশেষ প্রতিবেদক: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে ময়মনসিংহের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে স্কুলগুলো। অন্যদিকে পিছিয়ে পড়েছে গ্রামের স্কুলগুলো। পাসের হার থেকে শুরু করে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এসব স্কুল।
নগরীর গর্ব ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ থেকে চলতি বছর ৫২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫১ জন শিক্ষার্থী।
বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০৮ জন পরীক্ষার্থীর ৯৭ জন পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯ জন। পাসের হার ৮৯.৪১ শতাংশ।
ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের ২৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২৭৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫৩ জন। পাসের হার ৯৯.৬৪ শতাংশ।
বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩১৬ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯৫ জন। পাসের হার শতভাগ।
ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১৭২ পরীক্ষার্থীর ১৭২ জনই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫৯ জন। ক্যান্টনম্যান্ট বোর্ড হাই স্কুলের ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে একজন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৯ জন। পাসের হার ৯৯.৩৭ শতাংশ।
সরকারি ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের ১১৮ জনের মধ্যে সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৯ জন।
অন্যদিকে, নগরীর প্রবাহ বিদ্যানিকেতনে ৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৭ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩ জন। পাটগুদাম গার্লস হাই স্কুলে ২১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৮ জন। পাসের হার ৩৮.১০ শতাংশ।
উত্তরপাড়া জুনিয়র হাই স্কুলে ৩৩ জন পরীক্ষার্থীর ১৬ জনই অকৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ৫১.৫২ শতাংশ। গালগাঁও হাই স্কুলের ৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২২ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ২৮ জন।
জেলার গৌরীপুর উপজেলার অগ্রদূত বিদ্যানিকেতনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৮৬ জন। পাস করেছে ২৮ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৫৮ জন। পাসের হার ৩২.৫৬ শতাংশ।
একই উপজেলার বাতান্দার হাই স্কুলে ১০৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৭ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৬১ জন।
এ উপজেলার স্থানীয় নামাপাড়া আদর্শ হাই স্কুলের ৯৬ জনের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৩৬ জন। পাসের হার ৩৭.৫০ শতাংশ।
স্থানীয় গুঁজিখাঁ দেওয়ানবাগী জুনিয়র হাই স্কুলে ৫৩ জনের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ২০ জন। পাসের হার ৩৭.৭৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র একজন।
ঈশ্বরগঞ্জের ফানুর জুনিয়র হাই স্কুলে ১৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৩ জন পাস করেছে। ১৬ জন অকৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ১৫.৭৯ শতাংশ।
নান্দাইলের রায়পাশা হাই স্কুলে ৮৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাসের হার ৪৮.২৪ শতাংশ।
ইমাম হোসাইন হাই স্কুলে ২৯৭ জনের মধ্যে মাত্র ৯৭ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ২’শ পরীক্ষার্থী। পাসের হার ৩৪.৭৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন।
স্থানীয় আঁচারগাঁও জুনিয়র হাই স্কুলে ১৩২ জনের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২৬ জন। পাসের হার ১৯.৭০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
ফলাফলের এমন বিপর্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কালের আলো’কে বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৫০ শতাংশের নিচে পাস করলে সাধারণ বোর্ড থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তবে আমরা ফলাফল এখনও বিশ্লেষণ করিনি। বিশ্লেষণের পর দেখা হবে স্কুলগুলো এবারই ফলাফল খারাপ করেছে কি না, শিক্ষকদের কোনো অবহেলা আছে কি না। এ বিষয়ে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তা।