সামরিক সহযোগিতা বাড়াবে বাংলাদেশ-নেপাল, দুই সেনাপ্রধানের বৈঠকে সিদ্ধান্ত
প্রকাশিতঃ 10:15 am | February 12, 2020
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
নিজেদের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বাংলাদেশ সেনবাাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও নেপাল সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল পুর্না চন্দ্র থাপা।
আরও পড়ুনঃ রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর পর সেনাপ্রধানের সফর; বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়
একই সঙ্গে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন।
রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) নিজেদের সৌজন্য সাক্ষাতে এসব বিষয়ে তারা মতৈক্যে পৌঁছেন। বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ বিনিময়, শুভেচ্ছা সফর ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়েও তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কথা হয়। দায়িত্বশীল সূত্র কালের আলোকে নিশ্চিত করেছে এসব তথ্য।
কালের আলোকে ওই সূত্রটি জানায়, সাক্ষাতের শুরুতেই প্রতিবেশী দুই দেশের সেনাপ্রধান পারস্পরিক কুশলাদি বিনিময় করেন। দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের চলমান সম্পর্ক অন্য রকম এক উচ্চতায় পৌঁছবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একই সূত্র জানায়, কাউন্টার টেরোরিজম, ইউএনপিএসওসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেন দুই সেনাপ্রধান। নিয়মিতভাবেই দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কোর্স ও নিয়মিত স্টাফ টকের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। ঢাকার সঙ্গে কাঠমান্ডুর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা বিনিময়েরও সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে নেপালের সেনাপ্রধান বলেছেন, বিভিন্ন খাতে দুই দেশের সহায়তার সুযোগ বাড়ানো উচিত। তার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের নেপাল সফরে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগ বৃদ্ধি করায় নেপাল সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল পুর্না চন্দ্র থাপা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন।
দুই দেশের বিদ্যমান সম্পর্কে সন্তোষ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঈশ্বর পোখরেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপা ও নেপালের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল পুর্না চন্দ্র থাপা। দুই পক্ষই ভবিষ্যতে এই সম্পর্ককে আরও জোরালো করার আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ও নেপালের জনগণের মধ্যে সংযোগের ওপর জোর দিয়ে তারা বলেন, নেপালের কারনেলি হাইড্রো পাওয়ার প্রকল্প থেকে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদুৎ আমদানি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। আবার শীতের সময় নেপাল, ভুটান বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পরের বছরেই বাংলাদেশকে সমর্থন দেয় প্রতিবেশী দেশ নেপাল। সেই থেকেই ভিত রচিত হয়েছিল বাংলাদেশ-নেপাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সেই দুর্দিনে নেপালের দেওয়া সমর্থন ও সহায়তার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
বাংলায় জেনারেল আজিজকে শুভেচ্ছা
নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঈশ্বর পোখরেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপা ও নেপালের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল পুর্না চন্দ্র থাপা।
সবাই বাংলা ভাষায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটিতে সফরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে। তারা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের প্রতি তাদের বিনম্র শ্রদ্ধার কথা জানান।
দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ৫ দিনের সরকারি সফর শেষে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশে ফিরে এসেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এর আগে গত শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) তিনি নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
কালের আলো/এমএএএমকে