মাউশির টিস্যুবক্সে মুজিববর্ষের লোগো বাজেয়াপ্ত, কী বলছেন ডিজি?

প্রকাশিতঃ 8:19 pm | March 05, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) টিস্যুবক্সে প্রিন্ট করে মুজিববর্ষের লোগো ব্যবহার করা নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কমিটি সেই নমুনা সম্বলিত টিস্যুবক্স গ্রহণ না করে বাজেয়াপ্ত করেছে।

একই সঙ্গে অতি উৎসাহী এই বিষয়টি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন অধিদপ্তরটির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক গোলাম ফারুক। বৃহস্পতিবার (০৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, আগামী ১৭ মার্চ মহান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। তবে মুজিববর্ষ ঘিরে বাড়াবাড়ি না করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এরই মধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তরের টিস্যুবক্সে বঙ্গবন্ধুর লোগো ছাপা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি নজরে আসায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ফেসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, মুজিববর্ষের লোগো অনাকাঙ্খিতভাবে যত্রতত্র প্রিন্ট করার একটি ঘটনা, যা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে হয়েছে। তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

আমরা ইতোমধ্যে এই প্রিন্টের বক্সগুলো বাজেয়াপ্ত করেছি এবং এর পিছনে কে সেটি জানাতে বলেছি। পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করা হয়ে থাকলে অবশ্যই শাস্তি পেতেই হবে।

স্ট্যাটাসে কঠোর সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের সমাজ, প্রশাসন, রাজনীতিক পরিমণ্ডলের সবখানেই অবিবেচক আর অতিউৎসাহীর কোনো কমতি নেই। পাশাপাশি অপরাজনৈতিক শক্তির দোসররা তো আছেই! এরা চাইবে যে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, বিতর্ক সৃষ্টি করতে। এই চ্যালেঞ্জটি আমাদের আছেই।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী আরও লিখেছেন, এই বিশাল প্রশাসনের কোথায় কে কোন বিতর্ক ঘটিয়ে ফেলেছে তা আগে থেকে নিয়ন্ত্রণ কঠিন। তাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আর ব্যবস্থা নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।

সবার অবগতির জন্য আমরা জানাচ্ছি ‘মুজিববর্ষের’ আনুষ্ঠানিকতা কার্যক্রম, ইত্যাদির দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য একটি জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আছে। এর প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই কমিটি নির্দেশিত কাজের বাইরে কিছু করতে চাইলে আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন দুস্থ, গৃহহীন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কল্যাণমূলক কিছু করতে, যেমন তাদের জন্য গৃহনির্মাণ।

এতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় তার সাধারণ মানুষের জন্য যেই সমান অধিকারের দেশ তিনি রেখে যেতে চেয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের পথে আমরা অনেক দূর এগোতে পারবো। সুতরাং, অতিউৎসাহীরা সাবধান!’

সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে মুজিববর্ষ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) টিস্যুবক্সে প্রিন্ট করে কীভাবে বাংলাদেশের স্থপতির জন্মশতবার্ষিকীর লোগো ব্যবহার করা হয়েছে এই বিষয়টি জানতে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম কালের আলো যোগাযোগ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুকের সঙ্গে।

কালের আলো’র সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে তিনি বলেন, ‘আমরা যে নির্দেশনা দিয়েছি সেই নির্দেশনায় লোগো দিতে বলা হয়নি। আমাদের প্রকিউরমেন্ট কমিটি এরকম কোন নির্দেশনা দেয়নি। সরবরাহ দেওয়ার আগে রিসিভ কমিটিকে একটি নমুনা দেখায়। সেই নমুনাতেও টিস্যু বক্সে কোন লোগো ছিল না।’

অধ্যাপক গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘সম্ভবত মুজিববর্ষে একটি নির্দেশিকা আছে সব স্টেশনারীতে লোগো ব্যবহার করতে হবে। ফলে সম্ভবত ওরা মনে করেছে এই স্টেশনারীতেও মুজিববর্ষের লোগো ব্যবহার করতে হবে। এরপর ওরা লোগো ব্যবহার করে কিছু টিস্যু বক্স দিয়ে যায় মাউশিতে।

কিন্তু আমাদের রিসিভ কমিটি তারা এটি রিসিভ করেনি। এরপরও যদি বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয় তবে অবশ্যই তদন্ত করে দেখবো। উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’  

কালের আলো/এসএইচ/এমএ