বাড়ানো হয়েছে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর
প্রকাশিতঃ 6:01 pm | March 09, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আর কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। ফলে (কোভিড-১৯) এ আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত তিনজনই আছে বলে জানান তিনি।
তবে করোনা ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ সম্পর্কিত তথ্য জানাতে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নিয়মিত চারটি হটলাইন নম্বরের পাশাপাশি আরও আটটি নম্বর যোগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১৬২৬৩ নম্বরেও কল করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কেউ নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি বলেও জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ সম্মেলনে।
সোমবার (৯ মার্চ) কোভিড-১৯ নিয়ে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা।
সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার সংবাদের পর ওইদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে ৫০৯টি। এরমধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কল ছিল ৪৭৯টি। অনেকেই জানিয়েছেন তারা আমাদের হটলাইনে একবারে কল করে কথা বলতে পারছেন না। এসব কথা চিন্তা করে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর বাড়ানো হয়েছে আটটি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য বাতায়ন নামে পরিচিত ১৬২৬৩ নম্বরে কল করেও কোভিড-১৯ সম্পর্কে জানা যাবে।’
যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন তারা কবে ইতালি থেকে এসেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইতালি থেকে দুজন চার থেকে সাত দিন আগে দেশে এসেছেন।’ এছাড়া, এই মুহূর্তে চার জন আইসোলেশনে এবং একজন কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে জানান তিনি।
আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চার জনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাদের কারও শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর। কোয়ারেন্টাইনের এই ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থানের ক্ষেত্রে তাদের স্বজনদেরও সচেতন থাকতে হবে। তিনি যদি ভুল করে বাড়ি থেকে বের হয়েও যান তাকে মনে করিয়ে দিতে হবে কোয়ারেন্টাইনে আছেন।’ আর এজন্য বিদেশ ফেরতদের স্বজন, বাড়িওয়ালাসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
বিদেশ ফেরতদের সঙ্গে অনেকে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করছেন জানিয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এর ফলে রোগটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা খবর পাচ্ছি, শঙ্কিত হয়ে প্রতিবেশী এবং বাড়িওয়ালারা তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করছেন। আমরা যদি তাদের সহযোগিতা না করি তাহলে তাদের বাসা ছেড়ে হোটেলে বা বাইরে থাকতে হবে। আর তারা যদি সংক্রমিত হয়, তবে এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। এজন্য তারা যেন বাড়িতে থাকেন সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা করতে হবে।’
করোনা ভাইরাস সবখানে ছড়িয়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এখন সবাইকে নিয়ে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। কতটা আগে রোগটি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটিই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশকে এখন এই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আর এটি কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়। সব মন্ত্রণালয়, সব বিভাগ, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও এগিয়ে আসতে হবে। ভূমিকা রাখতে হবে গণমাধ্যমকেও।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ পরে জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি, চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে দুটি, সিলেট বিমানবন্দর এবং বেনাপোল স্থলবন্দরে আরও একটি করে স্ক্যানার মেশিন যোগ হচ্ছে।
কালের আলো/এনআর/এমএম