রোহিঙ্গাদের ওপর এখনও বর্বরতা চালাচ্ছে মিয়ানমার

প্রকাশিতঃ 12:34 pm | May 30, 2018

বিশ্ব ডেস্ক, কালের আলো:

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর এখনও বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার সরকার। রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতন শুরু হওয়ার বিশ্ব সম্প্রদায়ের অব্যাহত চাপ উপেক্ষা করে এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ধর্মচর্চার স্বাধীনতার ওপর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু (রোহিঙ্গা) গোষ্ঠীটি নিধনে পরিকল্পিতভাবে বর্বরতা চালানো হচ্ছে।

রোহিঙ্গা গণহত্যা ও সেনা নিপীড়নের ঘটনায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনে ট্রাম্প প্রশাসন।

সেসময় নেপিদোর ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে ওয়াশিংটন। এরপর গত সাত মাসেও রাখাইনে পরিস্থিতি পাল্টায়নি বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

বিশ্বব্যাপী ধর্মচর্চার স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক বলেন, ‘আমি সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছি। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগতভাবে নির্মূলে যে অভিযান শুরু হয়েছিল, তা এখনও বহাল আছে।’

স্যাম ব্রাউনব্যাক আরও বলেন, ‘বরং এখন নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কাচিন প্রদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ শুরু করেছে। মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের ওপর এ বর্বরতা বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই।’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে গত চার দশক ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার অভিযোগ তুলে সেনা অভিযানের নামে নৃশংসতা শুরু হলে আনুমানিক ১১ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সর্বহারা এসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রোহিঙ্গা নিধনের ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’বলেও আখ্যা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জাতিগত নিধন বলে অভিহিত করেছে। তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

কালের আলো/এমএস