জটমুক্ত শিক্ষাজীবন, দুই কৌশল নিচ্ছে ইউজিসি
প্রকাশিতঃ 12:28 pm | June 20, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন জটমুক্ত রাখতে পৃথক দুটি কৌশল অবলম্বনের ভাবনা-চিন্তা করছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি বাড়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত এক বছরের সেশনজট হতে পারে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।
সেক্ষেত্রে ইউজিসির ভাবনায় থাকা কৌশল দুটির একটি হলো- পড়ানো সিলেবাস থেকে চলতি সেমিস্টারের পরীক্ষা ব্যাচ ধরে নিয়ে পরের সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা চলাকালীন শুধু একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হবে। বাড়ি থেকে তাদের নিয়ে আসা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে। এরপর একইভাবে অন্য আরেকটি ব্যাচের পরীক্ষা নেয়া হবে।
দ্বিতীয় কৌশলটি হলো- অনলাইনে পরের সেমিস্টারের শ্রেণি-কার্যক্রম অব্যাহত রাখা। কৌশল দুটি সম্পর্কে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, চলতি সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ব্যাচভিত্তিক পরীক্ষা নেয়া যায়।
যেমন- প্রথম বর্ষের সব শিক্ষার্থীকে এনে পরীক্ষা নেয়া হবে। এক কক্ষে সর্বোচ্চ দু’জন থাকবে। তাদের বিদায় দিয়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ডাকা হবে। একই প্রক্রিয়ায় তারা পরীক্ষা দেবে। এভাবে আলাদাভাবে মাস্টার্স পর্যন্ত পরীক্ষা নেয়া যায়। শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসেই আনা-নেয়া করা হবে।
অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা অনলাইন সমীক্ষা চালিয়েছি। যদি ছুটি আরও দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে এ ব্যাপারে চিন্তা করা যেতে পারে। তবে সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের যেহেতু সামর্থ্য নেই, তাই এটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিডিরেন প্রকল্পের সঙ্গে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংযুক্ত। এতে আগে একসঙ্গে পাঁচ হাজার ক্লাস নেয়া যেত। করোনাকালে সার্ভিস দেয়ার জন্য এর সক্ষমতা দ্বিগুণ করা হয়েছে।
তবে ইউজিসির কৌশল দুটি এখনো চিন্তার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। তারা সম্মতি দিলেই তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। আগামী ২৫ জুন ভিসিদের নিয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সেশনজট নিরসনের বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সেশনজটের অভিজ্ঞতা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে। কী করে মোকাবিলা করতে হবে তা সংশ্লিষ্টরা ভালো জানেন।
আমাদের সঙ্গে শুধু অবহিত আর সম্মতির সম্পর্ক। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, ডিনস কমিটি ও সিন্ডিকেট। আমাদের চিন্তা ভিসিদের বলবো। আগামী ২৫ জুন তাদের সঙ্গে কথা হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘আমরা সবসময়ই শিক্ষার্থীদের সেশনজটমুক্ত রাখতে চাই। কিন্তু চলমান করোনা মোকাবিলা করে একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। ইউজিসি যে কৌশলের ধারনা দিচ্ছে তা বাস্তবায়ন করাও কঠিন হবে।’
কালের আলো/ওএইচ