করোনার মধ্যেও জঙ্গিরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে : ডিএমপি কমিশনার
প্রকাশিতঃ 11:23 am | July 01, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় ঘরে কাটাচ্ছেন। ঘরে বসে অন্য সময়ের থেকে বেশি সময় দিচ্ছেন অনলাইনে। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গিরা। মানুষকে জঙ্গিবাদে উদ্ভুদ্ধ করে চালাচ্ছে প্রচার-প্রচারনা।
আরও পড়ুনঃ শায়খ রহমান থেকে আব্দুল্লাহ; জঙ্গি দমনে অভূতপূর্ব সাফল্য র্যাবের
বুধবার (০১ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানানো শেষে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে মানুষ স্বাভাবিকভাবে বেশি সময় বাসায় থাকছেন। এখন বাসায় ধর্মীয় সাইটগুলোতে বেশি ভিজিট করছে মানুষ। এই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা কিন্তু কন্টিনিয়াসলি করোনার মধ্যেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। লোন উলফ বা একাকী হামলার জন্য তারা উদ্বুদ্ধ করছে, বিশেষ করে পুরুষ সদস্যদের ওপর হামলা করার জন্য। কী কী কায়দায় হামলা করতে হবে, একটি হাতুড়ি হলেও সেটি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করা, এ ধরনের নানাবিধ প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
‘কিন্তু আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত আমরা এটিকে প্রতিহত করতে পেরেছি। আশা করা যায় যে, ছোটখাটো কিছু সক্ষমতা তাদের থাকতে পারে কিন্তু বড় ধরনের কিছু করার ঘটনা সক্ষমতা তাদের নেই।’
তিনি বলেন, আমরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যে জঙ্গি হামলার মুখোমুখি হয়েছিলাম সেটি ছিল হলি আর্টিসান হামলা। সেটির চার বছর পূর্তি আজ। আমরা এখানে যে দুজন সহকর্মীকে হারিয়েছিলাম তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। যে সমস্ত দেশি-বিদেশি নাগরিক, নিরীহ মানুষ এই নৃশংসতার বলি হয়েছিলেন তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা ও মাগফেরাত কামনা করছি।
‘যারা এই ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন, যারা এখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন। এবং পুরো ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিলেন পরবর্তীতে আমরা তাদের সবার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি, সবার সাজা হয়েছে।’
‘তবে সাতজন সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আপিল করেছে, আপিলের শুনানি এখনও শুরু হয়নি, এই প্রক্রিয়াটি হয়তো করোনার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তা শুরু হবে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, হলি আর্টিসান হামলার ওই ঘটনার পরে বাংলাদেশ পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন ঢেলে সাজানো হয়েছে, একইভাবে জঙ্গিবাদে যারা জড়িত তাদের সক্ষমতা, ক্ষমতা সম্পর্কেও আমাদের একটা সুস্পষ্ট ধারণা হয়েছে।’
তিনি বলেন, হলি আর্টিসান হামলার পর থেকে একের পর এক আমরা জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি এবং ওদের সক্ষমতা যে পর্যায়ে ছিল, সেটি এখন একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন তারা যে সমস্ত ইম্প্রভাইজ বা বোমা বানায়, তাদের বড় এক্সপার্ট যারা ছিল তাদের সবাই আমাদের হাতে ধরা পড়েছে। জেলে আছে। অনেকে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে। তাই এখন সে ধরনের সক্ষমতা তাদের নেই।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, জঙ্গিরা এখন অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু তেমন কোনো মানুষকে এই জঙ্গিবাদের দিকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে বা সংঘবদ্ধভাবে আবার এদেশে জঙ্গিবাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে সাংগঠনিক ব্যবস্থার প্রয়োজন সেখানে কোনো সংগঠন গড়ে তুলতে পেরেছে, সেরকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এসবি/এমএইচএ