ময়মনসিংহের অক্সফোর্ড আনন্দ মোহন কলেজ

প্রকাশিতঃ 12:20 pm | January 07, 2018

কালের আলো: বৃহত্তর ময়মনসিংহের অক্সফোর্ড হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘আনন্দ মোহন কলেজ’। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ কলেজের মধ্যে আনন্দ মোহন কলেজটি অন্যতম। ২০০৮ সালে কলেজটি শতবর্ষ অতিক্রম করেছে। কলেজটির রয়েছে নানান গৌরবময় ঐতিহ্য ও বর্ণাঢ্য ইতিহাস। এ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছেন দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ। বর্তমান সরকার এর নিকট সকলের দাবি আনন্দ মোহন কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হোক।

শ্রেষ্ঠ বাঙালি, রাজনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক ব্যারিস্টার আনন্দ মোহন বসু ১৮৮৩ সালের ১লা জানুয়ারি কলেজটি আনন্দ মোহন বসুর পৈতৃক ভিটা শহরের সিটি কলেজিয়েট স্কুলে ‘ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউটশন’ নামে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৮৯০ সালের এপ্রিল মাসে ‘ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউটশন’ নাম পরিবর্তন করে ‘ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট স্কুল’ নামে অভিহিত করা হয়। ১৯০৮ সালে এ কলেজটি নামকরণ করা হয় ‘ময়মনসিংহ কলেজ’। ময়মনসিংহ জেলার প্রথম মুসলিম গ্র্যাজুয়েট বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ কলেজের নামে ২৬ বিঘা জমি দান করেন এবং তাঁর বন্ধু আনন্দ মোহন বসুর নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।

ভারতীয় বাংলার আনন্দ মোহন বসুর পৈতৃক ভিটাতে চালু করা কলেজটি। ১৯০৮ সালে কাচিঝুলিতে স্থানান্তরিত হয়ে নামকরণ করা হয় আনন্দ মোহন কলেজ। ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯০৯ সালে এ কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। আনন্দ মোহন কলেজটি ৩৯ বছর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। ১৯১৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আনন্দ মোহন কলেজকে প্রথম গ্রেডের কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। প্রতিষ্ঠাকালে আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্র ছিল মাত্র ১৭৮ জন ও শিক্ষক ছিলেন ৯ জন।

জানা যায়, এই কলেজের ছাত্র ছিলেন প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, লেখক সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, নীহাররঞ্জন রায়, জাদুকর পিসি সরকার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম মোফাখখারুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বিশ্বভারতীর শিক্ষক অরবিন্দ পোদ্দার, লেখক যতীন সরকার, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শামসুর রহমান, বিচারপতি এম এ রশিদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ।

১৯৬৪ সালে সরকারীকরণের পর বতর্মানে কলেজে ২০টি বিষয়ে অনার্সসহ মাষ্টার্স কোর্সে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। শিক্ষক রয়েছেন ২০১ জন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট বাংলাদেশ গঠনের পর কলেজের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন, একাডেমিক কার্যত্রমে ব্যাপক গতি সঞ্চালিত হয়। বৃদ্ধি পেতে থাকে শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যা, নতুন নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা, ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসের কাজ। ১৯০৯ সালে শ্রী বৈকুণ্ঠ কিশোর চক্রবর্তী এ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। পর্যায়ক্রমে এ পযর্ন্ত ৪৫ জন অধ্যক্ষ এ কলেজে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। বর্তমানে এ কলেজে প্রফেসর মো. জাকির হোসেন অধ্যক্ষ হিসেব দায়িত্ব পালন করছেন।