ফেলানী হত্যা : বিচার শেষ হয়নি ৭ বছরেও
প্রকাশিতঃ 12:55 pm | January 07, 2018
কালের আলো: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা ফেলানী খাতুনকে গুলি করে হত্যার সাত বছর পূর্ণ হয়েছে ৭ জানুয়ারি রোববার। ২০১১ সালের এই দিনে সীমান্ত পার হতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি এই কিশোরী। কিন্তু এই সাত বছরেও শেষ হয়নি হত্যার বিচার। আগামী ১৮ জানুয়ারি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এ হত্যার ঘটনায় করা দুটি রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের বেসরকারি সংস্থা মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) কর্মকর্তা কিরিট রায়ের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই মামলা ঝুলে থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। এটা পড়ে আছে। যেকোনো দিন এটা তালিকায় আসবে। সেই সময় আবার মামলা হবে।’
কিরিট রায় আরও বলেন, ‘সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেই অভিযোগ হয় পাচারের। এসব ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ফেলানীর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। সে নিরস্ত্র নারী ছিল, যাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাবার সঙ্গে দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত পার হতে গিয়ে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল অমিয় ঘোষের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী।
এ ঘটনাটি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকারকর্মীদের কাছে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। খোদ ভারতের গণমাধ্যমগুলোর সোচ্ছার ভূমিকায় কোচবিহারের বিএসএফের বিশেষ আদালতে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে দেশটির সরকার। আদালতে সাক্ষী দেন প্রত্যক্ষদর্শী বাবা নুরুল ইসলাম নুরু ও মামা আব্দুল হানিফ। কিন্তু অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেকসুর খালাস দেয় বিশেষ আদালত।
ফেলানী হত্যার সঠিক বিচার না পেয়ে ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে পুনরায় বিচারের আবেদন করেন ফেলানীর বাবা। পরে বিজিবি-বিএসএফের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ফেলানী হত্যার পুনর্বিচারে সম্মত হয় বিএসএফ।
সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার শুরু করে বিএসএফ। ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম আদালতে অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে পুনরায় স্বাক্ষ্য প্রদান করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
কিন্তু পুনর্বিচারে একই আদালত তাদের আগের রায় বহাল রাখে। ফেলানী হত্যার বিষয়ে প্রথম রিটটি করেন ভারতের বিশিষ্ট আইনজীবী অপর্ণা ভাট।
পরে ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সহায়তায় ফেলানী হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তার বাবা নুরুল ইসলাম নুরু।