কঠিন তিন চ্যালেঞ্জে ‘উত্তীর্ণ’ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস

প্রকাশিতঃ 9:12 am | September 01, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

বিদায়ী বছরের মাত্র দুই দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন ড.আহমদ কায়কাউস। নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন, সম্ভাবনা আর উদ্দীপনা নিয়ে কাজও শুরু করেছিলেন।

কিন্তু দায়িত্বের সূচনালগ্নেই অদৃশ্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মতো ভয়ানক এক সঙ্কটের মুখে পড়তে হয় দেশকে।

এই সঙ্কট মোকাবিলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জীবন ও জীবিকা দু’টোই রক্ষা করার থিউরি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজের সুদক্ষ নেতৃত্বগুণের পরিচয় দিয়েছেন বঙ্গকন্যা।

আর এসব কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে স্বভাবতই মুখ্য সচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিজের মেধা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছেন ড.আহমদ কায়কাউসও।

মুখ্য সচিব হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালনের আট মাসের মধ্যে করোনা সঙ্কট ছাড়াও সুপার সাইক্লোন আম্পান ও বন্যা মোকাবিলায় প্রজ্ঞা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

বিশ্লেষকরাও বলছেন, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় মোতাবেক অনবদ্য নেতৃত্বগুণের মাধ্যমেই চলতি বছরে তিনটি কঠিন চ্যালেঞ্জে ‘উত্তীর্ণ’ হয়েছেন মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস।

দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে নতুন নতুন কনসেপ্ট সামনে এনে সরকারে সঞ্চালনে চেষ্টা করেছেন। সৎ, কর্মঠ ও পরিশ্রমী কর্মকর্তাদের তিনি সামনে এনেছেন।

নিজের মেধা-মনন, পরিশ্রম আর দক্ষতার অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে কর্মগুণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন।

জানা যায়, সততা আর দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমেই গোটা বিশ্বকে চমকে জাদুমন্ত্রের মতোই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরই মধ্যে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা হানা দেওয়ার পর দেশের সব মানুষের জন্যই কার্যকর সব উদ্যোগ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে তিনি যেমন রেকর্ড প্রণোদনা প্যাকেজ গ্রহণ করেছেন তেমনি কর্মহীন ও অভাবী মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছেন।

প্রতিটি উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশবাসীর পাশে থেকে সাহস ও উৎসাহ জুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

সূত্র মতে, করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় সরকার যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, সেই সিদ্ধান্ত সুচারূভাবেই বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-ভাবনা বাস্তবায়নে নেতৃত্বও দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে প্রথমেই করোনাভাইরাস মোকাবিলার মতোন কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় ড.আহমদ কায়কাউসকে।

এ সময় তিনি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের গতিবিধির ওপর নজরদারি করতে গিয়েও সেসব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও সঠিকভাবেই সমন্বয় সাধন করেন।

সূত্র মতে, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সীমাহীন ব্যর্থতা আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠে।

মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মাঝে সমন্বয়হীনতাও প্রকাশ্যে চলে আসে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মুখ্য সচিব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের উপরে নিবিড় নজরদারি শুরু করেন।

কর্মহীন ও দু:স্থ মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমেও প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য মুখ্য সচিবকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

বিশেষ করে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ২ হাজার ৫’শ টাকা করে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মানবিক সহায়তার ‘বিশ্ব রেকর্ড’ বাস্তবায়নেও বিচক্ষণতার পরিচয় দেন মুখ্য সচিব।

ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গণভবনে এক ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আজ যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি আপনি (শেখ হাসিনা) উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল যে একসঙ্গে এত মানুষ মানবিক সহায়তা পাওয়া।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বাংলাদেশে আপনিই প্রথম এত সংখ্যক মানুষকে একসঙ্গে মানবিক সহায়তা প্রদান করছেন।’

সূত্র জানায়, সঙ্কটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অর্থ, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হয়ে এই সমন্বয়ের কাজ করছেন মুখ্য সচিব।

অনেকেই বলছেন, একজন দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে জনপ্রশাসনে আগে থেকেই একটি আলাদা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি রয়েছে ড.আহমদ কায়কাউসের।

করোনা সঙ্কট নিরসনে যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই সব কাজের সমন্বয় সাধন করা হচ্ছে তাই প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ অনুমতিতেই এসব কর্মযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ মুখ্য সচিব।

আরও জানা যায়, সুপার সাইক্লোন আম্পান মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেন মুখ্য সচিব। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় অগ্রিম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এ সময় উপকূলের মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্যসহায়তা ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রশংসা কুড়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে এসব কর্মযজ্ঞ সফলতার সঙ্গেই বাস্তবায়ন করেন ড.আহমদ কায়কাউস।

করোনা ও আম্পানের পর বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলাতেও সার্বিকভাবে কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। এ সময় বন্যা দুর্গতদের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগ ছিল চোখ পড়ার মতো।

সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্র, উদ্ধার তৎপরতা, কৃষি খাত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ইত্যাদি খাতের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সমন্বয় সভা করেন মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যা দুর্গত জেলাসমূহের ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা, আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ/ নদী ভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, পণ্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ খাদ্য মজুতসহ সামগ্রিক বিষয়ে নিরবচ্ছিন্ন মনিটরিং করেন। সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনেও উজ্জীবিত করেন।

কালের আলো/এসআর/এমএএএমকে