সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 11:55 pm | January 08, 2018

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ সবচেয়ে বড় সমস্যা। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সমস্যাকে সমাধান করতে হবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘‘একজন সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম-বর্ণ ও গোত্র নাই। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। আমরা ধর্মের নামে যেকোনো সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই। আর বিশেষ করে ইসলাম শান্তির ধর্ম। সেখানে মানুষ হত্যা করে বেহেশতে যাওয়া যাবে-এ ধরনের বিভ্রান্তি যারা পোষণ করে, তারা কখনোই বেহেশতে যাবে না। কাজেই ইসলাম যে শান্তির ধর্ম, সেই শান্তি বজায় রাখা সবারই কর্তব্য।’’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন।

এর আগে তিনি বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ১১টি কন্টিনজেন্ট এবং পতাকাবাহী দলের নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।

এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য ‘জঙ্গি-মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ দেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাস বা যুদ্ধাপরাধীদের স্থান হবে না। আমরা চাই, বাংলাদেশের মাটি থেকে জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ মুক্ত হবে, বাংলাদেশ শান্তির দেশ হবে। তাই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল করে আমরা দেশের প্রতিটি মানুষের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’’

এই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে আমরা বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে চাই বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গত বছর (২০১৭) পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩০ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ৭১ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৮ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫৩ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ প্রদান করেন।

জঙ্গি ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, ইন্সপেক্টর মরহুম চৌধুরী মো. আবু কয়ছর ও ইন্সপেক্টর মরহুম মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে বিপিএম-মরণোত্তর পদক প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পদক প্রদান করবেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়াম উদ্বোধন, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল পরিদর্শন এবং পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কল্যাণ প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন।

পুলিশ সপ্তাহের এবারের প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন পুলিশ সুপার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত প্যারেডে অংশ নেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।

পুলিশ সপ্তাহের কর্মসূচি
পুলিশ সপ্তাহের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন, ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের সম্মেলন, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, পুরস্কার বিতরণ (আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র/মাদক উদ্ধার প্রভৃতি), অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের পুনর্মিলনী, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা ইত্যাদি।