ঈদে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও অপপ্রচার রোধে সতর্ক থাকার নির্দেশ আইজিপি’র
প্রকাশিতঃ 8:27 pm | August 11, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
ঈদুল আজহা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
একই সঙ্গে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে কোন ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য সকলকে সতর্ক ও সজাগ থাকতেও আহবান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১১ আগষ্ট) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন এবং ঈদুল আজহা উপলক্ষে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব নির্দেশনা প্রদান করেন।
সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থামানো যাবে না, এমন নির্দেশনা দিয়ে আইজিপি বলেন, সড়ক, রেল, নৌপথ, পশুরহাট এবং ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
কোরবানির পশু পরিবহনে ব্যবহৃত নৌপথ ও সড়কপথে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। পরিবহনের গায়ে উৎসস্থল ও গন্তব্যস্থলের নাম সম্বলিত ব্যানার সংযুক্ত করতে হবে।
সভায় নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানির পশু উঠানামা রোধ, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাট ইজারাদার দ্বারা হাসিল হার প্রদর্শন, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখাসহ ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সূত্র জানায়, সভায় কোরবানির পশুর কৃত্রিম সংকটকারী, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীসহ কোরবানীর পশুর হাটের আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। চামড়া যাতে সীমান্তমুখী না হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
পুলিশ প্রধান ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী জনগণের সার্বিক সহায়তা ও সচেতনতা কামনা করে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে বলেন, অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে পানীয় এবং খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। বড় ধরণের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেবেন। অজ্ঞান ও মলম পার্টির অপতৎপরতা থেকে সর্তক থাকবেন। প্রয়োজনে লিফলেট ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের ব্যবস্থা করবেন।
আইজিপি জানান, ঈদে নৌ পথে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের লক্ষ্যে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য নৌ পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। নৌ পথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নৌ পুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা করবে।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, জেলা এবং থানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিরোধপূর্ণ স্থানে ঈদ জামাত না করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাস টার্মিনাল এবং আশেপাশের এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে টহল জোরদার, টিকেট কালোবাজারি ও মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয় সভায়। একই সাথে সভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিং এবং ঈদ জামাতস্থল, লঞ্চ, ট্রেন, বাস এবং মসজিদে জঙ্গি গোষ্ঠীর নাশকতা রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিটি ইউনিটকে সাইবার ক্রাইম মনিটরিং ইউনিট গঠন এবং সাইবার পেট্রল বাড়ানোর জন্যও গুরত্বপূর্ণ নির্দেশ প্রদান করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
আরও পড়ুন: কাঙ্গালী ভোজের খাবার সিভিল সার্জন দিয়ে পরীক্ষা করানোর নির্দেশ পুলিশ প্রধানের
কালের আলো/ওএইচ/এএ