যৌতুকের অভিযোগ নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়: মোসাদ্দেক
প্রকাশিতঃ 6:13 pm | August 27, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
সাবেক স্ত্রী (সদ্য তালাকপ্রাপ্ত) সামিয়া শারমিন উষা’র ১০ লাখ টাকা যৌতুকের অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তিনি বলেছেন, ডিভোর্সের ১০ দিন পর আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগ আনা রীতিমতো হাস্যকর।
মূলত দেশের মানুষের চোখে আমাকে এবং আমার পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই এমন বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। ডিভোর্স পেপারস পাওয়ার পরও এতোদিন তারা কোনো রিঅ্যাকশন দেখায়নি, কিছু বলেওনি। অথচ আজ বলছে, আমি ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছি। এটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।
স্বভাবসুলভ দৃঢ়তার সঙ্গেই বলে যাচ্ছিলেন মোসাদ্দেক। রোববার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে ময়মনসিংহ শহরের কাঁচিঝুলি গোলাপজান রোডের নিজ বাসা ছাড়েন তিনি। ঢাকার পথে থাকার সময়েই রাত সোয়া ১০টার দিকে কালের আলোর সঙ্গে দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনে কথা বলেন টাইগারদের সম্ভাবনাময় এই অলরাউন্ডার।
এর আগে এদিনই দুপুরে ময়মনসিংহ সদর আমলি আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনা খানের আদালতে মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন সামিয়া শারমিন উষা।
পরে আদালত মামলাটি আমলে না নিয়ে বিকেলেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
বছর ছয়েক আগে পারিবারিকভাবেই নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে খালাতো বোন সামিয়া শারমিন উষাকে বেছে নেন মোসাদ্দেক হোসেন। প্রথম দিকে সম্পর্কটা ভালো টিকলেও বছর দেড়েক যাবত মনোমালিন্য ও তিক্ততা শুরু হয়।
মধুর সম্পর্কে কেন এই ফাটল, এই প্রশ্নের উত্তরে মোসাদ্দেক বলছিলেন, আমার স্ত্রী চাইতো আমি তাকে নিয়ে আলাদা থাকি। আমার মা, ভাইদের সঙ্গে সংসার করতে চাইতো না। আমার মায়ের সঙ্গে প্রায়ই বেয়াদবি করতো।
কিন্তু ১০ বছর আগে আমি যখন আমার বাবাকে হারিয়েছি তখন আমার মায়ের শ্রম-ঘামেই আমি ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হয়ে উঠেছি। মা ছাড়া আমি রিক্ত, নিঃস্ব। এই নিয়ে মনোমালিন্য। অতঃপর ডিভোর্স।
কথাগুলো বলতে বলতেই মোসাদ্দেক যেন একটু দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। আমাদের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন ভাইয়ের সঙ্গে গত ১৫ আগস্ট আমাদের দু’জনেরই (সামিয়া) সমঝোতার জন্য বসার কথা ছিল। আমি আগ্রহী থাকলেও মূলত ওর (সামিয়া) অনিচ্ছার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। পরে আমি তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছি।
মিউচ্যুয়াল ডিভোর্স প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক বলেন, আমাদের বিয়ের কাবিননামায় দেনমোহর ছিল তিন লাখ টাকা। কিন্তু তারা আমার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করেছে। এই টাকা দেইনি বলেই ডিভোর্স পেপার পাঠানোর পর তারা আমার বিরুদ্ধে কেস করেছে মনগড়া, মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে।
এশিয়া কাপের অনুশীলন ক্যাম্প শুরুর মাত্র একদিন আগে স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলায় ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’ মোসাদ্দেক। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন কি না জানতে চাইলে মোসাদ্দেকের জবাব, আমার জন্য বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু আমি জাতীয় দলের ক্রিকেটার। আমার প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে খেলাতেই নিজের ফোকাস রাখা। অর্থাৎ, আগে খেলা তারপর অন্যকিছু। আমি আপাতত ক্রিকেট নিয়েই ভাবতে চাই। দেশবাসীর দোয়া চাই।
কালের আলো/এএ