অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দিল সরকার

প্রকাশিতঃ 10:05 am | January 05, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে যে টিকার দিকে সবাই মুখ করে আছে তেমন একটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এরইমধ্যে ট্রায়ালে সফল হওয়া বেশ কয়েকটি টিকার মধ্যে এগিয়ে থাকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত টিকাটির অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

সোমবার(০৪ জানুয়ারি) ওষুধ প্রস্তুতকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ব্যবহারের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই অনুমোদন দেয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান।

এর আগে টিকা অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে বেক্সিমকো। এই অনুমোদনের ফলে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের থৈরি অক্সফোর্ডের টিকাটি দেশে আনতে কোনো বাধা থাকছে না।

টিকাটির অনুমোদনের আগে সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এক খবরকে ঘিরে সেরামের এই টিকা রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় নানা আলোচনা। অবশ্য পরে খবরটি সত্য নয় বলে জানায় ভারতের এই ভ্যাকসিন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।

এর মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবসহ সরকারের দায়িত্বশীলরা জানান যথাসময়ে ভারতের কাছ থেকে টিকা পাওয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। সবশেষ দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে সোমবার অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দেয় সরকার। এর আগে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালের পক্ষ থেকে টিকার অনুমোদনের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আবেদনের কথা জানায়।

মহামারি করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকে এর প্রতিষেধক আবিষ্কারে কাজ করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। অনেক দেশ করোনার টিকার অনুমোদনও দিয়েছে। তবে টিকা আবিষ্কারের পরই যাতে পাওয়া যায় সেজন্য সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করে বেক্সিমকো।

টিকা রপ্তানির বিষয়ে ভারতের নিষেধ্বাজ্ঞা নিয়ে খবর চাউড় হওয়ার পর অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভারত থেকে নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশ করোনার টিকা পাবে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই ভারত থেকে বাংলাদেশ করোনার টিকা আসবে, চুক্তির কোনো ব্যত্যয় হবে না।

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে বাংলাদেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ টিকা আগামী মাসের শুরুতে পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে এরইমধ্যে ছয়শ কোটি টাকা সেরামের অ্যাকাউন্টে রবিবার জমা দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর একদিন পর টিকা রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।

আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমের এমন খবর নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন জানিয়েছেন, ‘তাদের টিকা রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়।’

মন্ত্রীর সঙ্গে টিকা নিয়ে একই সূরে কথা বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, টিকার ব্যাপারে যেহেতু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি হয়েছে, তাই যথাসময়ে টিকা পেতে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হবে না।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে।’

কালের আলো/ডিএসবি/এমএইচএ