‘অমায়িক’ এইচ টি ইমাম, হাসিমুখ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

প্রকাশিতঃ 10:08 am | September 20, 2018

পলিটিক্যাল এডিটর, কালের আলো :

দেশের নানা প্রান্ত থেকেই একের পর এক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আসছেন। সাবমিট করছেন জীবন বৃত্তান্ত। মনোনয়ন ইস্যুতে নিজেকে ‘বেটার’ হিসেবে প্রমাণ করতে উপস্থাপন করছেন প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত। নিজেদের দাবি করছেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির।

একজন ‘অমায়িক অভিভাবক’ ধৈর্য্য নিয়ে শুনছেন প্রত্যেকের কথাই। নিরাশ করছেন না কাউকেই। তবে দল মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করে আনতেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। সদাচরণে তিনি রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন। ফলে হাসিমুখেই আওয়ামী লীগ সভাপতি’র ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

প্রতিদিন সন্ধ্যা-রাত প্রার্থীদের অব্যাহত সাক্ষাত দিয়েও বিরক্তির ছাপ মাত্র নেই তাঁর মুখায়বে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে ‘হ্যাট্টিক’ বিজয় উপহার দিতে ক্লান্তিহীন পথ চলছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।

ভিডিও দেখুন:

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দূয়ারে কড়া নাড়ায় ভোট প্রস্তুতি জোরালো করেছে ক্ষমতাসীনরা। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন থাকতে নানা কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে দলটি। জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে কয়েক বছর ধরেই মাঠ পর্যায়ে নিবিড়ভাবে জরিপ কার্যক্রম চালিয়েছে তাঁরা।

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি এখনো অব্যাহত রয়েছে এই কার্যক্রম। ফলে মাঠ গুছানোর পাশাপাশি এখনো হাইকমান্ডের কাছে নিজেদের ‘এক্সপোজ’ করতে হন্যে হয়ে ছুটছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তবে শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে জুটবে মনোনয়ন নামের ‘সোনার হরিণ’ এই নিয়েই চলছে জল্পনা।

খোদ দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫০ টি আসনে বিশেষ জরিপ চালানোর কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী সংসদের জরুরি বৈঠকে। মুখ দেখে নয়, জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে এগিয়ে থাকা প্রার্থীরাই নৌকার মাঝি হবেন এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় প্রতিদিনই সরগরম থাকছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়। আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এই কার্যালয়ে বসছেন এইচ টি ইমাম। ভোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি হিসেবেই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নেওয়ার পাশাপাশি তাদের কথাও শুনছেন প্রধানমন্ত্রীর এই রাজনৈতিক উপদেষ্টা।

দেখা গেছে, এইচ টি ইমাম এই রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসার পর পরই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তাঁর কক্ষের দরজায়। প্রত্যেক প্রার্থীই নিজের স্বপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপনের পর বর্ষীয়াণ এই সাবেক আমলাকে সালাম করার পর দোয়া নিয়ে হাসিমুখে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

এখানেই দেখা গেলো নীলফামারীর বিভিন্ন আসনের কয়েক মনোনয়ন প্রত্যাশীকে। তাঁরা নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাশার বিপরীতে স্বপক্ষে ওঠে আসা বিভিন্ন দৈনিকের ‘মনোনয়ন রাজনীতি’র কাটিংও উপস্থাপন করেন। তাদের সঙ্গে আলাপের ফাঁকেই নীলফামারীর উন্নয়নে নিজের সম্পৃক্ততার কথাও স্মরণ করেন।

স্মৃতিচারণ করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘৮৪ সালে ডোমার-ডিমলার রাস্তা করে দিয়েছিলাম। তখন আমি কমিউনিকেশন সেক্রেটারি। অনেক কাজ করেছি সেই সময়।’

এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতের পর পরই সেখানে হাজির হলেন মহেশখালি ও কুতুবদিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রকৌশলী ইছমত আরা বেগম (ইছমু)। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ কমিটির সদস্য।

তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সেখানকার ইউনিয়নের ৩০ বছর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে এমন তথ্যও সন্নিবেশিত করলেন তিনি। এই মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী’র নির্দেশে এলাকায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করার কথাও তুলে ধরেন।

শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মিজানুর রহমান রাজা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের সম্মুখে নিজেকে দলের ত্যাগী ও লড়াই সংগ্রামের অগ্রনায়ক হিসেবে দাবি করেন।

শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এই প্রচার সম্পাদক বর্তমানে সেখানকার শ্রীবরদী উপজেলা আ’লীগের সদস্য। তাঁর স্ত্রী’র দাদা প্রয়াত ডা: নাদেরুজ্জামান খান ছিলেন নকলা উপজেলা আ’লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য। তাঁর বক্তব্য শুনে এইচ টি ইমাম দলের জন্য তাকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং জরিপের ওপর ভিত্তি করেই যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হবে বলেও জানিয়ে দেন।

কালের আলো/এসআর/এএ