নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

গত তিন সপ্তাহে দেশে ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে এ অর্থ পাঠিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বর্তমানে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫ টাকা ধরে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন।

গত বছরের পুরো মে মাসে আয় এসেছিল ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। সেই হিসাবে চলতি মাসের তিন সপ্তাহেই গত বছরের পুরো মে মাসের চেয়ে ৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার বেশি আয় দেশে এসেছে।

এর মাঝে ঈদের আগে অর্থাৎ ৯ থেকে ১২ মে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। আর ঈদের পরে ১৬ থেকে ২০ মে এ পাঁচ দিনে আয় এসেছে ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার।

জানা যায়, পুরো এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা ২০৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের আয় দেশে পাঠিয়েছিল, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের এপ্রিলে দেশে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। এই মন্দা পরিস্থিতিতেও বিদেশ থেকে এই সময়ে প্রবাসীরা ভালো আয় পাঠাচ্ছেন।

এর কারণ হিসেবে তারা মনে করেন, প্রবাসীদের বেশির ভাগই দেশে পরিবার-পরিজন রেখে যান। তাই প্রবাসীরা যা আয় করেন, তার সবই দেশে পাঠিয়ে দেন। এই কারণে দেশে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে।

ঈদে যাকাতের টাকাও এসেছে জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, অনেকে অনুদান পাঠিয়েছেন, কেউ আবার পাঠিয়েছেন জাকাতের অর্থ।

এদিকে প্রবাসী আয়ে সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বৈধ পথে আয় আসা আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য করোনায় বিদেশ যাতায়াত সীমিত হয়ে পড়ায় বৈধ উপায়ে অর্থ পাঠানোর পরিমাণও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

সূত্র অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। ওই সময়ে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ২৭ লাখ ডলার, ডাচ্বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ২২ লাখ ডলার, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।

জানা যায়, এখন ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও প্রবাসী আয় দেশে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে।

কালের আলো/ডিএস/এমএম