দৃশ্যটি ভয়াবহ…

প্রকাশিতঃ 10:17 am | June 03, 2021

জ্যেষ্ঠ সংবাদদাতা, কালের আলো :

লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইইথালামাইডসহ (এলএসডি) হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচ তরুণকে। থানায় নেওয়ার সময় পুলিশ ভ্যানে ছিল তাদের হাসিমুখ। একই দৃশ্য ছিল পল্টন থানায়ও। এমনকি সোমবার (১ জুন) দুপুরে যখন আদালতে তোলা হয় তখনও বদলায়নি তাদের সেই হাস্যোজ্জল আচরণ।

সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে অপরাধবোধ তো দূরের কথা, সমাজবিনাশী কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো অনুসূচনাও নেই তাদের মধ্যে। এমনকি রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পরও তাদের চেহারায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। পাঁচ তরুণের এমন আচরণে বিস্মিত আইনজীবীরাও।

এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই চলছে সমালোচনা। আইনজীবীদের ভাষ্য, বহু আসামি দেখেছেন তারা। কিন্তু এমন বিকারগ্রস্ত আসামি কখনও দেখেননি।

ঢাকার প্রধান মহানগর আদালতের (সিএমএম) অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হেমায়েত উদ্দীন খান হিরণ সাংবাদিকদের বলেন, যখনই দেখা যায় সমাজের কোনো মানুষের কাছে খুবই বেশি টাকা পয়সা থাকে, কোনো কিছুর অভাব থাকে না। তাদের রক্ষা করার মতো যথেষ্ঠ টাকা পয়সা বা লোকজন থাকে- তখনই এসব মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়।

‘আজ যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদেরও এমনি একটা মেন্টালিটি আমরা লক্ষ্য করেছি। যেহেতু তাদের বাবা-মায়েরা অনেক টাকাওয়ালা এবং তারা মনে করেছে এই মামলা কিছুই হবে না। হয়তো তারা খালাস পাবে বা মুক্তি পাবে। পরিণতি সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। সে কারণেই আজকে তারা ভাবলেশহীন অবস্থায় এবং হাসিখুশি অবস্থায় আছে। আমরাও সেটাই লক্ষ্য করেছি।’

অপরাধের মনস্ত নিয়ে কাজ করেন এমন একজন সমাজবিজ্ঞানী বলেন, মাদকের প্রভাবে এখানকার অর্থাৎ যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের এমন আচরণ সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অশনি সংকেত। মাদকদ্রব্যের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে কয়েকজন তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘পুলিশ যখন তাদের নিয়ে যাচ্ছে, তখন তাদের মধ্যে কোনো রকমের উৎকণ্ঠা নেই। তারা সবাই হাসছে। এটা একটা ভয়াবহ দৃশ্য, ভয়াবহ মেসেজ। এটা হতে পারে ওই মুহূর্তে তারা ওই মাদকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারে অথবা তাদের হিতাহিত জ্ঞান নেই। লজ্জা বা ভীতি কোনোটাই কাজ করছে না। আমাদের মনে রাখতে হবে মাদক দিয়ে কিন্তু যেকোনো একটা তরুণ সমাজকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে সবার আগে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা জরুরি।’

তরুণ সমাজ বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সচেনতার সঙ্গে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।

কালের আলো/এসজে/আরবিএ