মুজিববর্ষে বাড়ি পাচ্ছে আরও ৫৩ হাজার পরিবার

প্রকাশিতঃ 12:01 am | June 19, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের বাড়ি করে দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘মুজিববর্ষে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ৫৩ হাজার ৩৪০ হাজার জনকে জমিসহ বাড়ি দেয়ার এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাড়িসহ জমি গৃহহীনদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজন মনে করলে এই জমিতে ভবিষ্যতে তারা নিজেদের মতো করে বাড়ি করে নিতে পারবেন। তবে জমি অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের নজরদারিও থাকবে।

জানা যায়, মুজিববর্ষে দ্বিতীয় দফায় ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প দুই-এর আওতায় এ ঘরগুলো পাবেন গৃহহীন দরিদ্র পরিবারগুলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার (২০ জুন) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় ঘর পাবে ৫৩ হাজার ৩৪০ জন। এছাড়াও এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও এক লাখ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে জমিসহ ঘর দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।’

‘এসব গৃহহীন, ভূমিহীন, ছিন্নমূল পরিবারকে শুধু সেমিপাকা ঘরই দেয়া হচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে জমির মালিকানাসহ সারা জীবনের জন্য স্থায়ী ঠিকানা দেয়া হচ্ছে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন এসেছে। নারীর ক্ষমতায়নও হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কোনো মানুষ যাতে গৃহহীন না থাকে সে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার। লক্ষ্যমাত্রার আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২৩ জানুয়ারি ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে বিনা মূল্যে ঘর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে বেডরুম, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা থাকবে।

প্রতিটি বাড়ির নির্মাণে খরচ হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. কায়কাউস বলেন, ‘এর অন্য দিক হলো, এতে এমপাওয়ারমেন্ট হচ্ছে। একটা লোক যখন রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে, মাথায় ছাদ ছিল না, পায়ের নিচে মাটি ছিল না, সে কিন্তু লাখপতি হয়ে যাচ্ছে। জমির মূল্য যদি আমরা হিসাব করি, ৩০ হাজার থেকে ৮ লাখ টাকা প্রতি শতকের দাম পড়ে।’

‘এই হিসেবে গড়ে ৫০ হাজার টাকা যদি ধরি তাহলে জমির মূল্য, ২ লাখ টাকা বাড়ি বানাতে খরচ হচ্ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা সম্পত্তির মালিক হচ্ছে একটি দরিদ্র পরিবার। পাশাপাশি তাদের মাছ চাষ, হাঁস-মুরগি পালন—এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি অনেক জমিই অবৈধ দখলে ছিল। সেগুলো উদ্ধার করে দরিদ্র পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আপনারা রোববার দেখতে পাবেন, শ্রীমঙ্গলে প্রায় ৩৩ একর জমি অবৈধ দখলে ছিল, সেটাতে এখন একটা নান্দনিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’

‘দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘরগুলো হস্তান্তরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোববার প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করবেন,’ যোগ করেন তিনি।

কালের আলো/ডিএসবি/এমআরকে