ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না

প্রকাশিতঃ 4:57 am | September 25, 2018

:: ফারজানা জুঁই ::

আমরা সভ্য যুগের মানুষ দাবি করি কিন্তু আমরা তা কতটুকু পালন করে থাকি। বিয়ের পর কয়জন তার সংসার টিকিয়ে রাখতে পারছে। বিয়ের পর কিছুদিন যেতে না যেতে অনেকেরই মাথার ভেতর ঢুকে যায় সুখ-শান্তি নাই, ভালবাসা নাই, সম্মান নাই দুইজনের মাঝে। আমরা কেউ আবেগ থেকে কোন রকম চিন্তা না করেই এমন কারো সাথে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত পার করতে চাই যে আমাদের সাথে কোন কিছু হলেই ছেড়ে চলে যাবে এই ইনটেনশন এ থাকে আর আমরা শত চেষ্টা করে যেতে যেতে এক সময় ক্লান্ত। আজকাল এত কেন বিচ্ছেদ হচ্ছে আসুন জেনে নেই।

১.সচেতনতার অভাব

২.উদাসীনতা নিজের সম্পর্কে

৩.দুই পরিবারের ভিতর সম্মান এর অভাব

৪.পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস

৫.পারিবারিক সমস্যা যেমন বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারে জেনে শুনে বিয়ে করা।

৬.ত্যাগ করার মত, ছাড় দেবার মত মানসিকতা না থাকা

৭.অন্য ছেলে মেয়েদের সাথে অবাধ মেলা মেশা

৮.দায়িত্বশীলতার অভাব

৯.নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অন্যের সাথে আলোচনা।

সব থেকে বেশি সমস্যা হবার পেছনে কারণ পারিবারিক বিচ্ছেদ, পারিবারিক অশান্তি। এমন পরিবেশে বেড়ে উঠা মানুষ কখনো সুখী হতে পারেনা তাই অন্যকেও সুখে রাখার মত অবস্থা তাদের থাকেনা তাই এই রকম পরিবেশে থাকা মানুষ এর সাথে আজীবন থাকতে পারবেন কিনা তা মাথায় রেখেই আগাবেন! হাতে গোনা কয়জন হয়তো ভালো রাখার চেষ্টা করতে পারে কিন্তু তা খুবই কম!

অাপনার সম্পর্কের মূলমন্ত্র কী? চিরদিন সুখী হয়ে একসঙ্গে বাঁচা নাকি ভাঙনের ভয়ে একে অপরের থেকে গা বাঁচিয়ে কোনোভাবে সম্পর্ক বয়ে চলা? আপনারা একসঙ্গে থাকবেন বলেই একই পথে চলছেন, তাই নিজেদের সব সমস্যাগুলোকে নিজেদেরই সামলে উঠতে হবে। ভালোবাসার সম্পর্ক এমন হওয়া উচিত যা পরস্পরের স্বাধীনতা, মূল্যবোধ ও সম্মানের স্থানগুলোকে অক্ষত ও সুরক্ষিত রাখবে। বারবার বলি দুইজন ঠিক থাকলে অন্য কেউ এসে আপনাদের ভিতর কোন সন্দেহ, অশান্তি তৈরি করতে পারবে না তাই নিজেদের সমস্যা অন্যদের কাছে বলে নিজেদের ভিতর আরো জটিলতা তৈরি বুদ্ধিমানের কাজ না তাইনা?

আপনি অবশ্যই এমন কারো থেকে পরামর্শ নিতে পারেন যে আপনার সমস্যার সমাধান দিতে পারবে তবে দুই পরিবারের প্রতি বন্ধন যদি মজবুত না হয় ওইখানে অশান্তি লেগেই থাকে। কিভাবে সমাধান করা যায় কিভাবে দুইজন সুখী হতে পারে জেনে নেই।

১.শেয়ারিং, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা

২. পরস্পরের প্রতি যত্নবান হওয়া

৩.ছাড় দেবার মতো মানসিকতা

৪.অন্যের কথা শুনে প্রভাবিত না হওয়া

৫.কথায় কথায় সন্দেহ না করা

৬.দায়িত্বশীলতা

৭.যে কোন সমস্যা হলে পরস্পরের সাথে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা।

এরপরও যদি মনে করেন একেবারেই একসাথে থাকা সম্ভব না তবে অবশ্যই সন্তান হবার আগেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিবেন, সন্তান হবার পর কখনো বিচ্ছেদের  চিন্তা করবেন না । যেকোন ভাবেই চেষ্টা করতে হবে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আপনাদের একটা ভুলের জন্য মানসিকভাবে সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। জীবনটা তার হলেও তার ভালো থাকার দায়ভার আপনাদের উপরই তাই ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিওনা।

লেখক : ইনকাম ট্যাক্স কনসালটেন্ট, ঢাকা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন।

কালের আলো/ওএইচ