অর্থমন্ত্রীর রেমিটেন্স প্রণোদনা, ভয় ও সংশয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 11:25 am | June 27, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষিত বৈদেশিক আয়ের ওপর এই ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা। অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত এই প্রণোদনা নিয়ে ভয় ও সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম মান্নান।
তিনি বলেছেন, রেমিটেন্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা নিয়ে সব সময় আমার একটা সংশয় আছে। মুহিত সাহেবের (সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত) সংশয় আছে ২ শতাংশ প্রণোদনা নিয়ে। তখন আমি অর্থের জুনিয়র মন্ত্রী (অর্থ-পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী) ছিলাম। আমি তখন একটা মতামত দিয়েছিলাম জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে। আমি বলেছিলাম, এটা (প্রণোদনা) ওপেন করবেন না। এটা ছোট পরিসরে আসা দরকার। ব্যাপকভাবে সমান্তরালভাবে এটা করার দরকার নেই। কারা সৌদি আরবে ২০০ থেকে ৩০০ ডলারে কাজ করেন তাদের আমরা চিনি। তাদের সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। সবাইকে না দিয়ে শুধু তাদের যদি দিতাম তাহলে অনেক ভালো হতো। তাদের ৩ শতাংশ দিলে আরও ভালো হতো। কিন্তু সবাইকে সমানভাবে প্রবাসী আয়ে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আমার একটা বিষয়ে ভয় হচ্ছে সত্যিই একটা প্যারালাল পদ্ধতি চলছে কিনা। সবাই সমান্তরালভাবে ২ শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছে কিনা এটা দেখা দরকার।
শনিবার (২৬ জুন) ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২: বেসরকারি খাতের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে মন্ত্রী এই সংশয় প্রকাশ করেন। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এবং বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (বিইআই) যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
‘ইট ইজ কোভিড অ্যাফেকটেড বাজেট’ (করোনা প্রভাবিত বাজেট) মন্তব্য করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমি কয়েকটি কথা শুনেছি। কয়েক জন বলেছেন, এটা একটা কমন পয়েন্ট। ইট ইজ এ কোভিড অ্যাফেকটেড বাজেট। এটা সত্য, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু আমরা নয়, সারা পৃথিবীতে একই অবস্থা চলছে।
দেশের অগ্রগতি হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, গত কয়েকদিন আমি কয়েকটি সেমিনারে যোগ দিয়েছি এবং বলছি। কোভিডের মধ্যেও আমরা ভালো করেছি। আইএমএফ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা ভালো করছি। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের থেকেও অনেক সূচকে আমরা এগিয়ে। এটা আমাদের অনেক বড় ক্রেডিট।
কৃষি খাতের অবদান তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, আমাদের অগ্রগতির কেন্দ্রীয় পিলার হলো কৃষি। কৃষি খাতে আমরা নজর দিচ্ছি। এই বাজেটে কৃষিতে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে অনেক ঘাটতি আছে এটা আমি ফিল করি। তবে আমি ছোট খাটো আমলা ছিলাম, শুরুতে যা দেখেছি তার থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সাগর চেঞ্জ না হোক পুকুর চেঞ্জ হয়েছে, এটা আমি বলবো আমাদের ভাষায়।
রিজার্ভ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সরকারের একটা সংস্থা আছে এই বিষয়ে। সরকার কোনো একটা দেশকে লোনও দিচ্ছে এখান থেকে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অর্থনীতিবিদ ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএস সিদ্দিকী, বাংলাদেশের পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড: এম মাসরুর রিয়াজ, সাবেক ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
কালের আলো/ডিআরবি/এমএম