সালিশে কিশোরীকে বিয়ে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিতঃ 10:38 am | June 28, 2021

কালের আলো সংবাদদাতাঃ

প্রেমের টানে বাড়ি ছাড়া দুই কিশোর-কিশোরীর বিষয়ে ডাকা সালিশে পছন্দ হওয়ায় কিশোরীকে চেয়ারম্যানের নিজেই বিয়ে করার ঘটনা আর একইসঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (২৭ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

পটুয়াখালীর ডিসি, জেলা নিবন্ধক ও পিবিআইকে তদন্ত করে আলাদা তিনটি প্রতিবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সাথে ওই কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত শুনানিতে বলেছেন, পত্রিকার প্রতিবেদন দেখে যা বুঝলাম সালিশ করার জন্য ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ক্ষমতার অপ্যবহার করেছেন ওই চেয়ারম্যান।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম ও ইকরামুল হক টুটুল। এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৮ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

পরে আইনজীবী আমাতুল করিম ও ইকরামুল হক টুটুল বলেন, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপব্যবহার তদন্ত করবেন, পিবিআই ফৌজদারি অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করবেন এবং জেলা নিবন্ধক বিয়ে নিবন্ধনের বিষয়ে তদন্ত করবেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, কনকদিয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে একই ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুজন পালিয়ে যায়। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান। এরপরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শুক্রবার কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে যেতে বলেন। সেই অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান।

শুক্রবার দুপর ১টায় স্থানীয় কাজী মো. আবু সাদেককে বাড়িতে ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এদিকে এই বিয়ের পর তা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। পরেরদিন ওই একই কাজীর মাধ্যমেই তালাক সম্পন্ন হয়। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জানান, ওই মেয়ে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে না নেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানে মেয়েটিকে তার বাবার সঙ্গে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

কালের আলো/আরএস/এমএইচএস