বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়নে ২৭৭ কোটি টাকা চায় বেবিচক
প্রকাশিতঃ 1:39 pm | June 29, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো
দক্ষিণবঙ্গের মানুষের আকাশপথে যাতায়াতের দ্বার বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে বর্ধিতকরণ ও সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে ২৭৭ কোটি টাকা চেয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়নে একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ অর্থ সংস্থার তহবিল থেকে দেওয়া হবে। আর সরকারের কাছে ২৭৭ কোটি টাকা চাওয়া হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। কমবে হয়রানি।
জানা গেছে, গত এপ্রিলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের অনুদানের বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সর্বশেষ গত ২০ জুন আবারও একই বিষয়ে চিঠি পাঠিয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চাওয়া হয়।
বরিশাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ১৯৬৩ সালে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে বরিশাল বিমানবন্দর করা হয়। প্রথমে উদ্দেশ্য ছিল আকাশ থেকে শস্যখেতে কীটনাশক ছিটানো। মূলত ‘প্লান্ট প্রোটেকশন’ বন্দর হিসেবে দুই হাজার ফুট রানওয়ে নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৫ সালে এটিকে বিমানবন্দরে রূপান্তর করা হয়।
এরপর ১৯৯৫ সালের ১৭ জুলাই থেকে দিনের বেলা ঢাকা-বরিশাল রুটে বাণিজ্যিক বিমানের চলাচল শুরু। ১৬০ দশমিক ৫ একর জমির ওপর বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ফুট এবং প্রস্থ ১০০ ফুট। বর্তমানে এই বিমানবন্দরে বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী বিমান চলাচল করছে। তবে সময়ের প্রয়োজনে বিমানবন্দরের রানওয়ের সম্প্রসারণ ও এর এটি সংস্কারের কাজ জরুরি হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে বর্ধিতকরণসহ বিদ্যমান রানওয়ের সারফেস কংক্রিটে ঢালাইকরণ প্রকল্পটির ডিপিপি (ডিরেক্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল)- এর ওপর গত নভেম্বরে যাচাই কমিটির সভা হয়। সভাটি হয় বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে। ওই সভায় প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ২৫ শতাংশ অর্থ বেবিচকের নিজস্ব অর্থায়নে এবং অবশিষ্ট ৭৫ শতাংশ অর্থ সরকারের অনুদান হিসেবে বরাদ্দ প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
চিঠিতে অনুদানের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না। তারা বলছেন, প্রকল্পটির জন্য আসলে অনুদান নয়, সরকারি অর্থ চাওয়া হয়েছে। বাজেট থেকে মন্ত্রণালয়ের নামে অর্থ বরাদ্দ করা হলে তারপর সেটি বেবিচক-এর প্রকল্পে ব্যবহৃত হবে।
তবে এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অনুদানে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কোনো খাত থেকে অনুদান নেয়া হবে, সেটি দেশি না বিদেশি অনুদান- এসব বিষয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করলে সেই বিষয়ে মতামত দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের গৃহীত প্রকল্প সরকারি অর্থায়নে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটি ডিপিপি-তে উল্লেখ করে অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠাতে হবে। কিন্তু সেটি না করে প্রকল্পের জন্য সরকারের কাছে অনুদান চেয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
যোগাযোগ করা হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মাহবুব আহমেদ বলেন, সরকারের স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর পরিচালন ব্যয় মেটাতে অনেক সময় অনুদান দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি অর্থায়নে কোনো প্রকল্প নিতে হলে সেটি একনেকে অনুমোদনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পের জন্য তখন বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয় বলে জানান তিনি।
কালের আলো/আরএস/এমএইচএস