ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সচেতনতা
প্রকাশিতঃ 1:05 pm | October 06, 2018
সফিউল্লাহ আনসারী :
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর। ডেঙ্গু ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে জন থেকে জনে। এই মরণব্যাধি ডেঙ্গু আবারও আতংক, আবারও মৃত্যু ভয় নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে । এই জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধির সাথে সাথে জনগনকে অজানা শংকা ভাবিয়ে তুলেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সকল বয়সের মানুষ।
তবে এই ডেঙ্গু ভাইরাস কোমলমতি শিশুদের বেশি পরিমানে আক্রমণ করে থাকে। ফলে এর তীব্র প্রকোপে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুযন্ত্রণায় পতিত হয়। অনেক সময় মৃত্যুর কারন হচ্ছে এই ডেঙ্গু জ্বর। তবে আতংকিত হয়ে ডেঙ্গুকে ভয়ের কারন হিসেবে না নিয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর সতেচনতার সাথেই দ্রুত সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহন এ ভয়ানক জ্বর থেকে আমাদের সন্তান ও স্বজনদের রক্ষা করতে পারে।
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর হওয়ায়, ভাইরাস জনিত অন্য রোগের মতো সরাসরি এর কোনো প্রতিষেধক নেই, নেই কোন টিকা । আর এ কারনেই আতংকের আরেক নাম ডেঙ্গু । ইদানিং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুর সাথে চিকনগুনিয়া ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে আক্রান্ত রোগীদের হঠাৎ করে অনেক জ্বর ও গায়ে প্রচুর ব্যথা দেখা দিচ্ছে। এই ডেঙ্গুতে ক‘দিনে মধ্যে শিশু-নারীসহ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পত্রিকায় এসেছে।
এই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে এখনই ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে হবে। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ ও ভয়াবহতাকে থেকে জনগনের সুরক্ষার জন্য দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপও নিতে হবে।
“সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য প্রধানত দায়ী বলে বিজ্ঞমহলের ধারনা। মাঝে-মধ্যে বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা বাড়িয়ে এডিস মশার বিস্তার ঘটিয়ে মশার পরিমান বৃদ্ধি করছে। জানা গেছে, এডিস মশা মশার পরিমান যতো বৃদ্ধি পাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত লোকের হারও বাড়বে। ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচতে খুঁজে খুঁজে মশার উৎস বন্ধ করতে পারলেই ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।”
ক্লাসিক্যাল ও হেমোরেজিক ডেঙ্গু নামে দু‘প্রকারের ডেঙ্গুর জ্বর রয়েছে। এ জ্বরের ভয়াবহতাকে রক্ষা পেতে, “এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেনো কামড়াতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এরা ডিম পাড়ে- তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী এসব স্থানগুলোকে পানি নি;ষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র কর্তৃক এডিস মশা নিধন এবং এডিসের বংশ বিস্তার রোধে পদক্ষেপ গ্রহন জোরদার করতে হবে। ডেঙ্গুর প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে।
ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো স¤পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। ডেঙ্গু হলে করণীয় স¤পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে, রাজধানী ও জেলা-উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। সর্বোপরি এডিসমশা নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।” তবেই সম্ভব ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা ও প্রতিরোধ করা।
নগরবাসীর দাবী এবং প্রত্যাশা যতো দ্রুত সম্ভব এডিস মশার বিস্তার রোধ ও মশা ধ্বংস করে, আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে ডেঙ্গু আতংক থেকে রক্ষা করা। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে সকলের সচেতনতা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। ডেঙ্গু যেনো বৃদ্ধি পেতে না পারে সেদিকে লক্ষ রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী