প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এক কোটি বৃক্ষরোপণের লক্ষ্য অর্জনে নিবেদিত পুনাক, প্রশংসায় আইজিপি
প্রকাশিতঃ 8:07 pm | August 11, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
দেশ থেকে ক্রমশ নিষ্প্রভ হয়ে পড়ছে সবুজের আভা। নগরায়ণের নামে কাটা হয়েছে একের পর এক গাছ। ফলে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে পরিবেশ। তবে দেশে সবুজ বৃক্ষরাজিই যে অস্তিত্বের অনুষঙ্গ সেই বিষয়ে সচেতনতা গড়ার পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতেও নিজেদের এগিয়ে রেখেছে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।
সরকারের বৃক্ষ রোপণকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে পুলিশ-পুনাক সম্মিলিতভাবে গ্রহণ করেছে নানামুখী প্রয়াস। বর্ষায় সবুজের রূপকে আরও উজ্জ্বল এবং বিকশিত করতে পুলিশের সকল ইউনিটের সঙ্গে একযোগে বুধবার (১১ আগস্ট) ভার্চুয়ালি দেশজুড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)।
‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি সোনার বাংলা সবুজ করি’ প্রত্যয়ে পুলিশ ও পুনাক যৌথভাবে পরিচালিত সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় পুলিশপ্রধান পুলিশ সদর দপ্তরের হল অব প্রাইড কনফারেন্স রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের স্বার্থেই পরিবেশকে রক্ষার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত এক কোটি বৃক্ষরোপণের লক্ষ্য অর্জনে পুনাকের প্রয়াসকে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করেন।
চির সুন্দরের অভিবন্দনায় আইজিপি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সবুজ দেশকে আরও সবুজতর করতে বলেছেন। আর পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা দেশে সবুজের সমারোহ নিশ্চিত করতে কেবল বৃক্ষরোপণই নয়, গাছের পরিচর্যায় প্রত্যেককে যত্নবান হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশ সদর দপ্তর চত্বরে আইজিপি পুনাক সভানেত্রী গাছের চারা রোপণ করেন।

আইজিপি ড.বেনজীর সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বিশেষত ফলজ বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশকে সবুজতর করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি পশু-পাখি ও বৃক্ষের বৈচিত্র্য রক্ষা তথা উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল রক্ষায় বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে বিশাল সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে এক কোটি গাছ লাগানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের জন্য সারাদেশে বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাক যে কর্মসূচি নিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ কর্মসূচি দেশের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য, সমাজের জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পুনাক’র কার্যক্রমের প্রশংসা করে আইজিপি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে পুনাক বহুমাত্রিক সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সমাজ এবং পুলিশ পরিবারের কল্যাণে অনেক অবদান রেখে আসছে। করোনাকালেও দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পুনাক।

করোনাকালে কেন্দ্রীয় পুনাক প্রায় প্রতিরাতেই দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে। গত রমজানে প্রায় প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করেছে। কয়েকদিন আগে বঙ্গমাতার জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করেছে, এটি একটি অভিনব কর্মসূচি ছিল। পুলিশ পরিবারের কল্যাণের পাশাপাশি এটাকে দেশ ও জাতির কল্যাণে পুলিশের গন্ডির বাইরে নিয়ে আসা একটি সাহসী পদক্ষেপ। তিনি এজন্য পুনাক সভানেত্রীসহ সকল নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আইজিপি বলেন, পুনাক’র কর্মসূচি সুধী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। দেশ, সমাজ ও পুলিশ পরিবারের কল্যাণে আগামীতে এসব কর্মসূচি আরও বেগবান করার হবে বলে প্রত্যাশা করেন আইজিপি।
পুনাক সভানেত্রী তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পুনাক একটি অলাভজনক, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে পুলিশ পরিবারের পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে গত ৮ আগস্ট বঙ্গমাতার জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়ায় কম্বো মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। সেখানে তিন শতাধিক অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। আমরা বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি।

সকলের সহযোগিতায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে একটি অনন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে জীশান মীর্জা বলেন, ‘বৃক্ষ শুধু রোপণ করলেই হবে না। গাছের যত্ন নিয়ে পরিচর্যা করে একে বড় করে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি (এএন্ডআই) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি (এফএন্ডএল) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মোঃ মাজহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি মোঃ আতিকুল ইসলাম, পুলিশ সদর দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুনাক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/জিকেএম/এমকে