প্রথম আলো’র মালিক লতিফুরকে দুদকে তলব
প্রকাশিতঃ 6:56 pm | October 11, 2018
সেন্ট্রাল ডেস্ক, কালের আলো:
দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজী দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের মালিক এবং ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লতিফুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) দুদক’র উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন এ সংক্রান্ত চিঠি দেন। যাতে আগামী ১৮ অক্টোবর সকাল ১০টায় তাকে দুদকের সেগুন বাগিচা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।
নোটিশে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা আছে, ‘জনাব লতিফুর রহমান, চেয়ারম্যান ও সিইও ট্রান্সকম গ্রুপ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ট্রান্সকম গ্রুপভুক্ত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের গ্যাস বিল, বিদ্যুত বিল ও ভ্যাট ইত্যাদি ফাঁকি দিয়ে শত শত কোটি অবৈধ সম্পদ অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার এবং অবৈধ উপায়ে সরকারি জমি দখলে রাখার অভিযোগ।’
‘বর্ণিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।’
যদিও দুদকের নোটিশ এখনও হাতে পাননি বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এই ধনকুবের ব্যবসায়ী। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ফোন পেয়েই আমি জানলাম। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ হিসেবে যে ৫০ জনের তালিকা করা হয়েছিল, তাতেও নাম ছিল লতিফুরের। তবে সে সময় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
লতিফুরের ট্রান্সকম গ্রুপের কাছেই দেশের বাংলা এবং ইংরেজিতে দুটি প্রভাবশালী দৈনিক প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মালিকানা রয়েছে।
১৯৯৮ সালে ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানায় বের হয় প্রথম আলো। ১৯৯১ সালে সৈয়দ মোহাম্মদ আলী ডেইলি স্টার পত্রিকা প্রকাশ করলেও পরে তাও কিনে নেয় ট্রান্সকম গ্রুপ।
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার বিকাশে এই দুটি পত্রিকার ভূমিকা থাকলেও নানা সময় সরকারের পক্ষ থেকে ট্রান্সকমের দুটি পত্রিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশেষ করে পদ্মাসেতু ইস্যুতে তাদের সমালোচনা আছে।
বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তুলে তখন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার তা ফলাও করে প্রচার করে। সে সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে নিয়ে নানা ব্যাঙ্গাত্মক লেখনিও প্রকাশ করে তারা। তবে কানাডার আদালত এই অভিযোগকে মিথ্যা বলার পর সেটি ফলাও করে আর প্রচার করেনি তারা।
ঢাকায় মেট্রোরেলের রুট নিয়েও জটিলতা তৈরিতেও প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সমালোচনা আছে। আর রুট নিয়ে নাগরিক সমাজের একাংশের আন্দোলনের কারণে প্রকল্পটি তিন বছর পিছিয়েছে।
গণমাধ্যম ছাড়াও নানা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ট্রান্সকম গ্রুপ। ট্রান্সকম ফুড লিমিটেড, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক লিমিটেড, ট্রান্সকম কাস্টমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড, টি হোল্ডিং লিমিটেড, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ট্রান্সক্র্যাফট লিমিটেড, বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডেরও মালিক তারা।
ট্রান্সকম গ্রুপেরে ব্যবসা শুরু হয়েছিল চা চাষের মাধ্যমে। লতিফুর রহমান নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালক। এছাড়া তিনি আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। ২০১৭ সালে রাজস্ব বোর্ড তাকে কর বাহাদুর সম্মাননাও দেয়।
কালের আলো/এনবি